আজকাল অনেকেই মোবাইলে বা কম্পিউটারে ফ্রিল্যান্সিং করতে চাচ্ছেন। কিন্তু এর আগে ফ্রিল্যান্সিং কোন কাজের চাহিদা বেশি তা জানতে হবে। এটা জানার পর আপনার কাজ শেখা উচিত। কেননা মার্কেটপ্লেস চাহিদা অনুযায়ী কাজ শিখলে। কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। আমাদের এটাও জানতে হবে কোন কাজ খুব সহজে শেখা যায়।
ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য অনেক অনেক কাজ আছে। তবে এর মধ্যে কিছু কাজের চাহিদা ভবিষ্যতেও প্রচুর পরিমাণ থাকবে। চলুন দেখে নেই কোন কাজের চাহিদা বেশি-
১) ডিজিটাল মার্কেটিং
ফিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে ডিজিটাল মার্কেটিং এর চাহিদা ও ব্যপকতা সবথেকে বেশি। আর এই কাজে মার্কেটপ্লেসে ছড়াছড়ি। আর আগামী ২০ বছরেও এর চাহিদা শেষ হবে না। অনেকেই জানেন না। ডিজিটাল মার্কেটিং কি জিনিস। এটার গভীরতা অনেক বেশি।
আরো পড়ুন-
আর ডিজিটাল মার্কেটিং একাধিক কাজ নিয়ে গঠিত। যে সকল ডিজিটাল মার্কেটিং এর কাজে মার্কেটপ্লেসে সবথেকে চাহিদা তা হল-
১. এসইওঃ
আপনি ফ্রিল্যান্সিং কোন কাজের চাহিদা বেশি লিখে সার্চ করেন। তাহলে এটি প্রথমে থাকবে। কারণ এসইও করে একটি ওয়েবসাইটকে গুগলের প্রথম পেজে নিয়ে আসা যায়। এতে করে সেই ওয়েবসাইটের ভিজিটর বৃদ্ধি পায়। আর সকল বায়ার চায় তার ওয়েবসাইটের ভিজিটর বৃদ্ধি পাক। আর আপনি যদি এই কাজটি একবার ভালভাবে রপ্ত করতে পারেন। তাহলে আপনাকে আর বসে থাকতে হবে। আপওয়ার্ক, ফাইবার সহ যেকোন মার্কেটপ্লেসে এই কাজের চাহিদা আকাশ ছোঁয়া। তাই আপনি এই কাজটি শিখতে পারেন। এসইও এর অনেক কাজ আছে। যা আপনি মোবাইল দিয়েই করতে পারবেন।
আরো পড়ুন-
২. কন্টেন্ট রাইটিং বা ব্লগ লেখা
আপনি যদি খুব ভাল লিখতে পারেন। আর সেই লেখা যদি এসইও ফ্রেন্ডলি হয়। তাহলে মার্কেটপ্লেসে আপনার ডিমান্ড অসীম। ব্লগ লেখার কাজ আপনি মোবাইল দিয়েই করতে পারবেন। ফাইবার, ফ্রিল্যান্সার ইত্যাদি মার্কেটপ্লেসে এই কাজের খুবই কদর। এটাও ডিজিটাল মার্কেটিং এর কাজ।
৩. অ্যাফেলিয়েট মার্কেটিং
উন্নত বিশ্বে এই কাজের চাহিদা ও ব্যাপকতা অনেক। বিশেষ করে অ্যামাজন, ইবে, আলিএক্সপ্রেস এর মত ওয়েবসাইটগুলিতে অ্যাফেলিয়েট মার্কেটিং কাজ দিয়ে থাকে। এই কাজটি করা অনেক সহজ। আর প্রচুর চাহিদা। আপনি চাইলেই অ্যাফেলিয়েট মার্কেটিং শিখে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করতে পারেন।
৪. সোস্যাল মিডিয়া মার্কেটিং
এই কাজটি করতে যেমন অনেক সহজ। তেমনি এই কাজের কদর অনেক বেশি। প্রতিদিন নতুন নতুন হজারো সোস্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর কাজ পোস্ট হয়। সোস্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর মধ্যে ফেসবুক, ইন্সটাগ্রাম পেজ লাইক, পোস্ট তৈরি, আপডেট ইত্যাদির কাজ রয়েছে। এই কাজগুলি আপনি আপনার মোবাইল দিয়েই করতে পারবেন।

ফ্রিল্যান্সিং কোন কাজের চাহিদা বেশি
৫. পে পার ক্লিক (Pay Per click)
গুগল ও ফেসবুকে অ্যাড দেওয়ার কাজ হল পে পার ক্লিক। যদি বলা হয় ফ্রিল্যান্সিং কোন কাজের চাহিদা বেশি তাহলে এই কাজটির নাম থাকবে। উন্নত দেশের বেশিরভাগ বায়ার তার কোম্পানির প্রচারণা করে অ্যাডের মাধ্যমে। আর এই কাজটি আপনি খুব সহজেই আপনার মোবাইল দিয়ে করতে পারেন। এই কাজে একবার দক্ষ হয়ে উঠলে আপনার ইনকাম অনেক বেশি হবে। তাই আপনি এই কাজটি শিখতে পারেন।
২) ডাটা এন্ট্রি
ফিল্যান্সিং এর কাজ করার ক্ষেত্রে সবথেকে সহজ কাজ হল ডাটা এন্ট্রি। আপনি যদি ফাইবার মার্কেটপ্লেসে ডাটা এন্ট্রি লিখে সার্চ করেন। তাহলে এত পরিমাণ কাজ দেখতে পাবেন। যা চিন্তারও বাইরে। ডাটা এন্ট্রির মত সহজ কাজ করে অনেকে লাখ টাকা আয় করছেন। ডাটা এন্ট্রির কাজ মানেই যে টাইপিং করা। তা কিন্তু নয়। এখানেও আপনার স্কিল দেখানোর জায়গা আছে। আপনি এই কাজটি খুব ভালভাবে শিখে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করতে পারেন। আপনি মোবাইল দিইয়েও ডাটা এন্ট্রির কাজ করে স্বাবলম্বী হতে পারেন। ফ্রিল্যান্সিং কোন কাজের চাহিদা বেশি এটা লিখে সার্চ করলে। ডাটা এন্ট্রি সবার আছে আসবে। ডাটা এন্ট্রি কাজ করার আগে আপনাকে এক্সেল, স্প্রেডশীট, ওয়ার্ড, পাওয়ার পয়েন্ট, গুগল ডক ইত্যাদিতে কাজ করা শিখতে হবে। কয়েকটি ডাটা এন্ট্রির কাজ হল-
- ডাটা মাইনিং
- কপি পেস্ট
- ডাটা স্ক্রাপিং
- পিডিএফ টি ওয়ার্ড
- ওয়েব অ্যানালাইসিস
- বিটুবি লিড জেনেরেশন
৩) ভিডিও এডিটিং
দিন দিন যেমন ইউটিউব ও ফেসবুকের চাহিদা বাড়ছে। তেমনি ভিডিও এডিটিং এর চাহিদাও বাড়ছে। আগে মানুষ কোন কিছু জানতে গুগলে সার্চ করত। আর এখন তারা ইউটিউবে সার্চ করে। কেননা এর মাধ্যমে খুব সহজেই যেকোন জানা যায়। ইউটিউব ও ফেসবুক ভিডিও এর মাধ্যমে মানুষ খরব, বিনোদন, শিক্ষা সবকিছুই পায়।
আর এখান থেকে প্রচুর পরিমাণ টাকা ইনকাম করা যায়। তাই বায়াররা ভিডিও এডিটিং করাতে চায়। ভিডিও এডিটিং এর কাজও মার্কেটপ্লেসে জনপ্রিয়। আপনি চাইলে এখন থেকে ভিডিও এডিটিং শুরু করে দিতে পারেন। আর ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার গড়ে নিতে পারেন। ভিডিও এডিটিং এর কাজ আজকাল অনেক মোবাইল অ্যাপ দিয়ে করা যাচ্ছে। আপনি চাইলে সেখান থেকেই শুরু করতে পারেন। আপনার আয় বাড়তে থাকলে আপনি কম্পিউটারে আরো প্রফেশনালি এটা শুরু করতে পারেন। আর আপনার আয় ২ গুণ করতে পারেন। কম্পিউটারের জন্য ভাল কয়েকটি ভিডিও এডিটিং সফটওয়ার হল-
৪) গ্রাফিক্স ডিজাইন
অনলাইনে গ্রাফিক্স ডিজাইনের কাজ কোনদিনও ফুরাবে না। গ্রাফিক্স ডিজাইন এর মধ্যে আছে কভার ডিজাইন, ভিজিটিং কার্ড ডিজান। এছাড়া ওয়েবসাইট মোক আপ, লোগো ডিজাইন ইত্যাদি। এই কাজগুলির যে কি চাহিদা। তা মার্কেটপ্লেস থেকে ঘুরে আসলেই দেখতে পারেন। আপনি এখনি গ্রাফিক্স ডিজাইনকে আপনার ক্যারিয়ার হিসেবে নিতে পারেন। প্রফেশনালি গ্রাফিক্স ডিজাইন কাজ করার জন্য। আপনার একটি কম্পিউটার থাকতে হবে।
তবে অনেক মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে আপনি বুক কভার ডিজাইন, লোগো ডিজাইন। এমনকি ভিজিটিং কার্ড ডিজাইন, কভার ডিজাইন করতে পারবেন। আপনি গ্রাফিক্স ডিজাইনের কাজ ইউটিউব ভিডিও দেখে শিখতে পারবেন। কয়েকটি গ্রাফিক্স ডিজাইন কাজ-
১. লোগো ডিজাইন
২. গেম ডিজাইন
৩. ব্যানার, কভার ডিজাইন
৪. প্যাকেজিং ডিজাইন
৫. ওয়েবসাইট মকআপ ( Mockup)
৬. ডিজিটাল প্রডাক্ট ডিজাইন
কয়েকটি প্রসিদ্ধ গ্রাফিক্স ডিজাইন সফটওয়ার হল-
৫) ওয়েব ডেভেলপমেন্ট ও অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট
এই কাজের চাহিদা যুগ যুগ ধরেই চলে আসছে। বিশেষ করে ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এর কাজের ছড়াছড়ি। ওয়েব ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্ট কাজের মধ্যে যে কাজগুলির চাহিদা বেশি-
১) সি এম এস ওয়েবসাইট
২) ওয়েবসাইট টেমপ্লেট
৩) ওয়েবসাইট বিল্ডার্স
৪) থীম ও প্লাগিন তৈরি
পৃথিবী যতদিন আছে। ওয়েবসাইট তত দিন থাকবে। তাই ওয়েব ডেভেলপারের চাহিদাও থাকছে। তাই আপনি ফ্রল্যান্সিং কাজ হিসেবে ওয়েবডেভেলপমেন্টকে পছন্দ করতে পারেন। আর এখন অ্যাপ ডেভেলপমেন্টের কাজও করতে পারেন। এটাতেও প্রচুর চাহিদা। আপনি অ্যান্ড্রয়েড ও আইওএস অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট শিখে প্রতিমাসে ৫ থকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত আয় করতে পারবেন।
শেষ কথা
আপনি ফ্রিল্যান্সিং শুরু করতে চাচ্ছেন। কিন্তু আপনি ফ্রিল্যান্সিং কোন কাজের চাহিদা বেশি তা জেনে না থাকলে। আপনি উপরের যেকোন একটি কাজ এর মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করে দিতে পারেন। তবে একটা বিষয় মাথায় রাখতে হবে। আপনি যে কাজ করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবেন। সেই কাজই করবেন। যে কাজ করতে আপনার বোর মনে হবে। সে কাজ না করারি ভাল। আগে কাজ ভালভাবে শিখুন। তারপর ফ্রিল্যান্সিং শুরু করুন। আশা করি সফল হবেন।
অবশ্যই পড়ুনঃ