বর্তমানে ডিজিটাল মার্কেটিং কাজের ব্যপক চাহিদা। ডিজিটাল মার্কেটিং করে ইনকাম করা এখন অনেক সহজ।
ডিজিটাল মার্কেটিং হল একটি অনলাইন মার্কেটিং, যা আপনি কম্পিউটার, মোবাইল, ট্যাবলেট ইত্যাদি ডিভাইসের মাধ্যমে করতে পারবেন।
আপনি অনলাইনে ভিডিও এর মাধ্যমে, ডিস্প্লে অ্যাডস, সোস্যাল মিডিয়ায় পেইডভাবে বিজ্ঞপণ দিয়ে এভাবে মার্কেটিং করতে পারবেন।
আমরা আগে টেলিভিশনে বিজ্ঞাপণ দেখিয়ে, সংবাদপত্রে অ্যাড দিয়ে, বিলবোর্ডে বিজ্ঞাপণ দেখিয়ে পণ্যের প্রচারণা করতাম।
ডিজিটাল মার্কেটিং অনেকটা সেই রকম ভাবেই কাজ করে থাকে। তবে এখানে অনলাইনে পণ্যের প্রচারণা করা হয়।
বিভিন্ন সোস্যাল মিডিয়া, ইউটিউব ভিডিও, অনলাইন সফটওয়ার, অনলাইন গেম, ওয়েবসাইট ব্লগে এভাবে অনলাইনে ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমে এখন পণ্যের প্রচারণা করা হয়।
এই পোস্টে যা যা থাকছে-
ডিজিটাল মার্কেটিং কি?
এটা হল একটি অনলাইন মার্কেটিং। অনলাইনে বিজ্ঞাপণ দেখিয়ে, সোস্যাল মিডিয়াতে পেইড ও ফ্রিতে পণ্যের প্রমোশন করে, ইমেইল, গুগল অ্যাডস ইত্যাদির মাধ্যেমে কোন পণ্যের প্রচারণা করাকে ডিজিটাল মার্কেটিং বলে।
ডিজিটাল মার্কেটিং এর কাজ
আপনি নানাভাবে ডিজিটাল মার্কেটিং করে ইনকাম করতে পারবেন। ইন্টারনেটের এই যুগে এখন ডিজিটাল মার্কেটিং করে বেশ ভালো পরিমাণ আয় করা সম্ভব।
আর দিন দিন এর চাহিদা বাড়তেই আছে। ডিজিটাল মার্কেটিং এর গুরত্বপূর্ণ কাজগুলি হলঃ
- সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন
- কন্টেন্ট মার্কেটিং
- সোস্যাল মিডিয়া মার্কেটিং
- পে পার ক্লিক মার্কেটিং
- অ্যাফেলিয়েট মার্কেটিং
- ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং
- ইমেইল মার্কেটিং
- মোবাইল মার্কেটিং
- ইউটিউব মার্কেটিং
কেন ডিজিটাল মার্কেটিং গুরত্বপূর্ণ
বর্তমানে ইন্টারনেট অনেক সহজলভ্য হয়ে যাচ্ছে। এখন অধিকাংশ মানুষ ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ওয়াইফাই এর মাধ্যমে ব্যবহার করছে।
এছাড়া এখন সবার হাতে হাতে স্মার্টফোন হওয়াতে সহজেই মানুষ মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারছে। এই সুযোগে এখন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, যারা আগে টেলিভিশন ও নিউজপেপার এর মাধ্যমে অফলাইনে বিজ্ঞাপণ দিত, তারা এখন অনলাইনে বিজ্ঞাপণ দিচ্ছে।
কেননা অনলাইনে বিজ্ঞপণ দিলে অল্প পরিশ্রম ও অল্প টাকায় বেশি সংখ্যক মানুষের কাছে তাদের পণ্যের প্রচারণা তারা করতে পারছে।
নানা উপায়ে এভাবে ডিজিটাল মার্কেটিং করে ইনকাম করা সম্ভব হচ্ছে। তাই বলা যায়, ডিজিটাল মার্কেটিং এর গুরত্ব অপরিসীম।
ডিজিটাল মার্কেটিং করে ইনকাম করার উপায়
আপনি নানা উপায়ে ডিজিটাল মার্কেটিং করে আয় করতে পারবেন। দেখে নিন যেসকল উপায়ে ডিজিটাল মার্কেটিং করে আয় করতে পারবেন-
১. অ্যাফেলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে
ডিজিটাল মার্কেটিং এর একটি গুরত্বপূর্ণ কাজ হল অ্যাফেলিয়েট মার্কেটিং। অ্যাফেলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে আপনি যেকোন পণ্য বিক্রি করে কমিশনের মাধ্যমে ইনকাম করতে পারবেন।
এই মার্কেটিং করতে আপনার প্রচুর পরিমাণ ট্রাফিক বা ভিজিটরের দরকার। আপনি নিজে একটি ব্লগ সাইট খুলে বা ইউটিউব চ্যানেল খুলে তাতে অর্গানিকভাবে বা পেইডভাবে ভিজিটর আনতে পারেন।
এরপর আপনি বিভিন্ন আফেলিয়েট পণ্য আপনার ওয়েবসাইট, ইউটিউব ভিডিও বা ফেসবুকের মাধ্যমে বিক্রি করে কমিশন করে ইনকাম করতে পারেন।
এভাবে আপনি নিজের জন্য আফেলিয়েট মার্কেটিং করে ইনকাম করতে পারেন আবার বায়ারের জন্য ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটে কাজ করে ইনকাম করতে পারেন।
অ্যাফেলিয়েট মার্কেটিং করে প্রতিমাসে ৫০ থেকে ৮০ হাজার টাকা ইনকাম করা সম্ভব। তবে এর জন্য আপনাকে অ্যাফেলিয়েট মার্কেটিং খুব ভালো বুঝতে হবে।
২. কন্টেন্ট মার্কেটিং এর মাধ্যমে
ডিজিটাল মার্কেটিং প্রাণ হল কন্টেন্ট। এটা ডিজিটাল মার্কেটিং ভিত্তি প্রস্তর গঠন করে।
আপনি যতই মার্কেটিং করেননা কেন, তাতে যদি কন্টেন্ট না থাকে, তাহলে আপনার কোন মার্কেটিং করে লাভ নেই।
আপনি যদি খুব ভালো লিখতে পারেন, তাহলে সেই লেখা একটি ওয়েবসাইটে লিখে, তাতে আপনার পণ্যের প্রচারণা করতে পারেন।
তবে এক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই ভিজিটর আনতে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন, ইমেইল মার্কেটিং, পুশ নোটিফিকেশন, পেইড প্রমোশন ইত্যাদির প্রয়োজন হবে।
ভালো কন্টেন্ট লিখতে পারলে আপনি অন্যের জন্য ফ্রিল্যান্স ডিজিটাল মার্কেটার হিসেবে কাজ করে ইনকাম করতে পারবেন।
আর যদি আপনি ভালো কন্টেন্ট বা ব্লগ লিখতে পারেন ও ভালো মার্কেটিং করতে পারেন, তাহলে নিজের জন্য ওয়েবসাইট বানিয়ে তাতে গুগল অ্যাডসেন্স এর মাধ্যমে ইনকাম করতে পারবেন।
এছাড়া নিজের পণ্যের বিক্রি বাড়িয়ে ও অ্যাফেলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে ইনকাম করতে পারবেন।
তবে এর জন্য আপনাকে কন্টেন্ট কিভাবে লিখতে হয় তা শিখতে হবে ও গুগল অ্যাডসেন্স এর যাবতীয় শিখতে হবে।
কন্টেন্ট লেখার জন্য আপনার যেসকল দক্ষতা থাকা প্রয়োজনঃ
- এসইও বা সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন দক্ষতা
- কিওয়ার্ড রিসার্চ দক্ষতা
- এডিটিং ও বিন্যাস দক্ষতা
- লেখালেখিতে পারদর্শীতা
- অনলাইন বিভিন্ন এসইও টুলসে দক্ষতা
৩. সোস্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর মাধ্যমে – ডিজিটাল মার্কেটিং করে ইনকাম
আজকাল বিভিন্ন সোস্যাল প্ল্যাটফর্মে প্রচুর পরিমাণ মানুষ ভিজিট করে। ফেসবুক, ম্যাসেঞ্জার, ইন্সটাগ্রামে প্রতিদিন কোটি কোটি মানুষ প্রবেশ করে।
আর তাই এই প্ল্যাটফর্মগুলিতে আপনি যদি আপনার আপনার পণ্যের লিংক, অ্যাফেলিয়েট লিংক, ওয়েবসাইট লিংক দিতে পারেন।
তাহলে আপনি অনেক ভিজিটর পেতে পারেন। এতে করে আপনার পণ্যের বিক্রি অনেক বেড়ে যাবে বা আপনি যেই প্রয়োজনে ভিজিটর চাচ্ছেন তা বেড়ে যাবে।
আর ইনকাম বৃদ্ধি পারে। আপনি এই প্ল্যাটফর্মে টাকা দিয়ে বুস্টিং করে বা ফেসবুক অ্যাডস এর মাধ্যমে অনেকে অনেক মানুষের কাছে পৌছাতে পারবেন।
এভাবে আপনি ডিজিটালি ইনকাম করতে পারবেন। সোস্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর কাজ করে আপনি ফাইবার, আপওয়ার্ক, গুরু সহ বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে কাজ করে ইনকাম করতে পারবেন।
আপনি এই কাজ করে মাসে কমপক্ষে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
৪. ইউটিউব মার্কেটিং এর মাধ্যমে
আপনি যদি ডিজিটাল মার্কেটিং করে ইনকাম করতে চান, তাহলে ইউটিউব হবে আপনার জন্য সেরা অপশন।
আপনি ইউটিউবে একটি চ্যানেলে খুলে তাতে যেকোন ক্যাটাগরি যেমনঃ ভ্রমণ, রান্না, টেক টিপস, খেলা,গান ইত্যাদি ভিডিও আপলোড করে ইনকাম করতে পারবেন।
এভাবে ভিডিও দিয়ে আপনি গুগল অ্যাডসেন্স, অ্যাফেলিয়েট মার্কেটিং, স্পন্সর ইত্যাদি মাধ্যমে ইনকাম করতে পারবেন।
আবার আপনি আপনার ইউটিউব ভিডিও ইউটিউব প্ল্যাটফর্মে টাকা দিয়ে বুস্টিং করে অথবা অর্গানিকভাবে ট্রাফিক এনে ইনকাম করতে পারবেন। ইউটিউব মার্কেটিং করে প্রতিমাসে লাখ টাকা ইনকাম করা সম্ভব।
৫. ডিজিটাল পণ্য বিক্রি করে ইনকাম
আপনি যদি খুব ভালো ডিজিটাল মার্কেটিং করতে পারেন, তাহলে আপনি আপনার বিভিন্ন ডিজিটাল প্রডাক্ট বা পণ্য বিক্রি করে ইনকাম করতে পারেন।
আপনি আপনার ডিজিটাল পন্যের ব্যাপারে ব্লগ লিখে, সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন করে, গুগল অ্যাডস, ফেসবুক বুস্টিং, ইমেইল মার্কেটিং ইত্যাদির মাধ্যমে বিক্রি বাড়িয়ে ইনকাম করতে পারেন।
কয়েকটি ডিজিটাল পণ্য হলঃ
- ইবুক
- অ্যাপস বা গেমস
- অনলাইন কোর্স
- ওয়েব টেমপ্লেটস
৬. ফ্রিল্যান্সিং করে – ডিজিটাল মার্কেটিং করে ইনকাম
আপনি যদি ডিজিটাল মার্কেটিং এর বিভিন্ন কাজে অনেক বেশি এক্সপার্ট হয়ে থাকেন, তাহলে বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস যেমনঃ আপওয়ার্ক, ফ্রিল্যান্সার, পিওপল পার আওয়ার, গুরুতে কাজ করে ইনকাম করতে পারবেন।
এই সকল মার্কেটপ্লেসে ডিজিটাল মার্কেটিং কাজের ব্যপক চাহিদা। আপনি ঘন্টা প্রতি বা ফিক্সড প্রাইজে অ্যাফেলিয়েট মার্কেটিং, কন্টেন্ট মার্কেটিং, ব্লগিং, গুগল অ্যাডসেন্স, গুগল অ্যাডস, সোস্যাল মিডিয়া মার্কেটিং, ইমেইল মার্কেটিং ইত্যাদি কাজ করে ইনকাম করতে পারবেন।
আপনি এভাবে ফ্রিল্যান্সিং করে মাসে ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা অনায়েসেই আয় করতে পারবেন।
রিলেটেডঃ ফ্রিল্যান্সিং করে আয় করার সহজ উপায়
৭. মোবাইল মার্কেটিং
ডিজিটাল মার্কেটিং আরো একটি গুরত্বপূর্ণ সেক্টর হল মোবাইল মার্কেটিং। মোবাইল মার্কেটিং এর মাধ্যমে আপনি সহজেই ইনকাম করতে করতে পারবেন।
বিভিন্ন মোবাইল অ্যাপের বিক্রি বৃদ্ধি, ওয়েবসাইটের পুশ নোটিফিকেশন সেট করা, এসএমএস মার্কেটিং এর মাধ্যমে অনেক মানুষের কাছে একটি ম্যাসেজ পাঠানো, কিউ আর কোডের কাজ করে আপনি আপনার ব্যবসার সম্প্রসারণ ঘটিয়ে বা ফ্রিল্যান্স হিসেবে বা এজেন্সী মালিক হিসেবে কাজ করে ইনকাম করতে পারবেন।
৮. গুগল অ্যাডস (Goggle Ads) এর মাধ্যমে
গুগল অ্যাডস (Google ads) হল গুগলের একটি পেইড প্ল্যাটফর্ম।
এই প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে আপনি আপনার পণ্য, ওয়েবসাইট ইত্যাদির বিজ্ঞাপণ গুগলে সার্চ ইঞ্জিনের সার্চবারে, ওয়েবসাইটে দিতে পারবেন।
এক্ষেত্রে আপনি টার্গেটেড কাস্টমার পাবেন ও আপনার ইনকাম বৃদ্ধি পাবে।
তবে এভাবে বিজ্ঞাপণ দিতে আপনার টাকা খরচ হবে। গুগল অ্যাডস এর মাধ্যমে আপনি ফ্রিতে কিওয়ার্ড রিসার্স করতে পারবেন এছাড়া আপনার কনভারশন ট্রাকিং করতে পারবেন।
গুগল অ্যাডস এর মাধ্যমে বিজ্ঞাপণ দিয়ে আপনি আপনার নিজের ব্যবসার উন্নতি করতে পারবেন।
এছাড়া আপনি যদি এই ডিজিটাল মার্কেটিং কাজে অনেক বেশি পারদর্শী হয়ে থাকেন, তাহলে ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে এই কাজ করে ইনকাম করতে পারবেন।
৯. অনলাইন কোর্স বিক্রি করে – ডিজিটাল মার্কেটিং করে ইনকাম
আপনি যদি যেকোন কাজে খুব ভালো পারদর্শী হয়ে থাকেন, তাহলে আপনার আপনার সেই দক্ষতাকে অনলাইনে বিক্রি করে ইনকাম করতে পারবেন।
ধরুন, আপনি খুব ভালো মোবাইল সার্ভিসিং পারেন বা আপনি ভালো ওয়েব ডিজাইন করতে পারেন।
তাহলে আপনি আপনার সেই দক্ষতাকে ডিজিটালি বিক্রি করে ইনকাম করতে পারবেন।
এর জন্য আপনি আপনার দক্ষতা বা স্কিলকে ভিডিও আকারে বানিয়ে একটি ওয়েবসাইটে আপলোড করে তা বিক্রি করে ইনকাম করতে পারবেন।
এক্ষেত্রে আপনি আপনার দক্ষতার উপর কয়েকটি ভিডিও বানিয়ে একটি ফাইল তৈরি করে তার দাম নির্ধারণ করে দিতে হবে।
কেউ যদি আপনার সেই দক্ষতা কিনতে চায়, তাহলে তাকে টাকা দিয়ে আপনার কাছ থেকে সেই ভিডিওগুলি কিনে নিতে হবে।
এক্ষেত্রে আপনার বিক্রি যত বেশি হবে, আপনি তত ইনকাম করতে পারবেন। এভাবে আপনি ডিজিটাল মার্কেটিং করে ইনকাম করতে পারবেন।
১০. এসইও মার্কেটিং করে
এসইও মনে হল সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন। এই এসইও দুইভাবে করা যায়। ১. অনপেজ এসইও ২.অফপেজ এসইও।
অনপেজ এসইও সাধারণত ওয়েবসাইটের ভেতরে করতে হয়।
অনপেজ এসইও এর মধ্যে রয়েছে কিওয়ার্ড রিসার্স, মেটা ট্যাগ, মেটা ডিস্ক্রিপশন, ব্যাকলিংক তৈরি ইত্যাদি। আর অফপেজ এসইও ওয়েবসাইটের বাইরে করতে হয়।
সোস্যাল মিডিয়া মার্কেটিং, ইউটিউব মার্কেটিং, ফোরাম পোস্ট মার্কেটিং, ইমেইল মার্কেটিং, অ্যাফেলিয়েট মার্কেটিং ইত্যাদি হল এসইও মার্কেটিং।
আপনি পেইড ও নন পেইড দুই মাধ্যমে অফপেজ এসইও করতে পারেন। এসইও মার্কেটিং করে সহজেই আপনি ব্যবসার প্রসার করতে পারবেন। আর এই কাজ করে ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেসে মাসে ৫০ হাজার টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
১১. ইকমার্স স্পেশালিস্ট – ডিজিটাল মার্কেটিং করে ইনকাম
আপনি যদি ওয়ার্ডপ্রেস (WordPress), শপিফাই (Shopify), উইক্স (Wix) ইত্যাদি ইকমার্স বিষয়ে অনেক বেশি পারদর্শী হয়ে থাকেন, তাহলে আপনি এই সকল ইকমার্স প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে নিজের পণ্য অনলাইনে বিক্রি করতে পারবেন।
এই প্ল্যাটফর্ম গুলি অনলাইন দোকানের মত কাজ করে। এই অনলাইন দোকানে আপনি আপনার পণ্যগুলি সাজিয়ে রাখবেন। আর ক্রেতা আপনার ইকমার্সের প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে পণ্য কিনতে পারবে।
আপনি আপনার এই ইকমার্স প্ল্যাটফর্মের লিংক ইউটিউব, ফেসবুক, গুগল অ্যাডস ইত্যাদির মাধ্যমে মার্কেটিং করে ইনকাম করতে পারবেন।
১২. নিজস্ব ডিজিটাল মার্কেটিং এজেন্সি
ডিজিটাল মার্কেটিং এর সবকিছু শিখে আপনি নিজেই একটি ডিজিটাল মার্কেটিং এজেন্সী খুলে ইনকাম করতে পারবেন।
যেমন- Asprivate আইটি একটি ডিজিটাল এজেন্সী। এখানে বিভিন্ন কোর্স বিক্রি করা হয়। এছাড়া বিভিন্ন অনলাইন সার্ভিস এখানে টাকার বিনিময়ে দেওয়া হয়।
এছাড়া এই এজেন্সীতে লেখালেখি করে ইনকাম করার ব্যবস্থা রয়েছে। আপনি এই রকম একটি ডিজিটাল প্রতিষ্ঠান নিজেই খুলে মাসে লাখ টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
কিভাবে ডিজিটাল মার্কেটিং শিখবো?
বর্তমানে ডিজিটাল মার্কেটিং শিখে আপনি ব্যক্তিগত ব্যবসা করে বা ফ্রিল্যান্সিং করে ইনকাম করতে পারবেন। অর্থাৎ আপনি ডিজিটাল মার্কেটিং করে ইনকাম করতে পারবেন।
তাই এটি শেখা আমাদের জন্য গুরত্বপূর্ণ। আর ডিজিটাল মার্কেটিং শিখতে পারলে কর্মক্ষেত্রে আপনাকে কখনোই বসে থাকতে হবেনা।
আপনি আপনার একটি উজ্জ্বল ক্যারিয়ার গড়ে নিতে পারবেন।
আর দিন দিন এই কাজের চাহিদা বাড়তেই আছে। দেখে নিন কি কি উপায়ে ডিজিটাল মার্কেটিং শেখা যায়ঃ
১. অনলাইনে কোর্স করেঃ
ডিজিটাল মার্কেটিং শেখার সবথেকে ভালো উপায় হল অনলাইনে কোর্স করে শেখা। এতে করে আপনাকে কষ্ট করে কোন প্রতিষ্ঠানে যেয়ে শিখতে হচ্ছে না।
আপনি ঘরে বসে মোবাইল বা কম্পিউটারের মাধ্যমে ডিজিটাল মার্কেটিং শিখতে পারবেন। অনেক প্রতিষ্ঠান থেকে আপনি অনলাইনে কোর্স করে এই কাজ শিখতে পারবেন।
তবে Asprivate আইটিতে আপনি অত্যন্ত সুলভ মূল্যে ডিজিটাল মার্কেটিং শিখে নিজের ক্যারিয়ার গড়তে পারেন।
২. অফলাইন কোর্স করেঃ
আপনি যদি ডিজিটাল মার্কেটিং করে ইনকাম করতে চান, তাহলে বিভিন্ন অফলাইন কোর্স করে শিখতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনাকে যেকোন একটি ডিজিটাল মার্কেটিং শেখার প্রতিষ্ঠানে যেতে হবে ও তাদের কাছ থেকে শিখতে হবে।
আপনাকে এজন্য এই রকম আইটি সেন্টারে ভর্তি হতে হবে। তবে খেয়াল রাখতে হবে সেই আইটি সেন্টার যেন অনেক ভালো মানের হয়।
৩. ইউটিউব দেখেঃ
আপনার যদি বোঝার দক্ষতা অনেক ভালো হয়ে থাকে, তাহলে আপনি ইউটিউবে ডিজিটাল মার্কেটিং এর উপর বিভিন্ন ভিডিও দেখে ফ্রিতেই এই কাজ শিখতে পারবেন।
এর জন্য আপনাকে প্রথমে গুগলে ডিজিটাল মার্কেটিং এর উপর অনেক আর্টিকেল পড়ে নিতে হবে। এরপর ইউটিউবে ভিডিও দেখে ভালো করে প্রাকটিস করে শিখতে হবে।
৪. কোর্স কিনেঃ
আপনি কোন ভাল ইনফ্লুয়েন্সারের কোর্স কিনে ডিজিটাল মার্কেটিং শিখতে পারেন।
তবে এক্ষেত্রে আপনাকে দেখে নিতে হবে যে, সেই ইনফ্লুয়েন্সার আদৌ ডিজিটাল মার্কেটিং করে সফল কিনা।
আপনি অনেক সুলভ মূল্যেই এই সকল ইনফ্লুয়েন্সারদের কাছ থেকে কোর্স কিনে সহজেই ডিজিটাল মার্কেটিং শিখতে পারবেন। এরপর শেখার পর ডিজিটাল মার্কেটিং করে ইনকাম করতে পারবেন।
ডিজিটাল মার্কেটিং এর সুবিধাগুলি কি কি?
ডিজিটাল মার্কেটিং হল যেকোন পণ্যের প্রচারের একটি স্মার্ট মাধ্যম। ডিজিটাল মার্কেটিং এর উপকারিতা ইনেক বেশি। দেখে নিন কি কি সুবিধাঃ
১.খরচ কমঃ
অন্যান্য মাধ্যম যেমন টেলিভিশন, নিউজপেপার, বিলবোর্ডে ইত্যাদি মাধ্যমে বিজ্ঞাপণ বা মার্কেটিং খরচ অনেক বেশি হয়।
তাছাড়া এই সকল মাধ্যমে কাস্টমার অনেক কম পাওয়া যায়। অন্যদিকে ডিজিটাল মার্কেটিং এ কম খরচে অনেক
বেশি পরিমাণ কাস্টমার পাওয়া যায়।
২. পৃথিবী ব্যাপী পণ্যের প্রচারণাঃ
আপনি ডিজিটাল মার্কেটিং এ সারা দুনিয়াব্যাপী পণ্যের প্রচারণা করতে পারবেন। আপনি সোস্যাল মিডিয়া প্রমোশন, বুস্টিং, গুগল অ্যাডস, ইমেইল মার্কেটিং ইত্যাদি মাধ্যমে পৃথীবির যেকোন দেশে আপনার পণ্য বা অনলাইন প্রডাক্টের প্রচারণা করতে পারবেন।
৩. মার্কেটিং তদারকি সুবিধাঃ
আপনি যেকোন অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ও টুলস এর মাধ্যমে কাস্টমারের ইন্টারেস্ট, বয়স ও লোকেশন অনুযায়ী মার্কেটিং করতে পারবেন ও তাদারকি করতে পারবেন।
এতে করে আপনি আসল কাস্টমারের কাছে আপনার পন্যটি পৌঁছাতে পারবেন।
এছাড়া আপনার মার্কেটিং এ কোন সমস্যা হচ্ছেনা কিনা বা তার সমাধান কিভাবে করা যায় তা এই অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ও টুলসের মাধ্যমে ঠিক করে নিতে পারবেন।
ডিজিটাল মার্কেটিং করার জন্য কয়েকটি অনলাইন প্ল্যাটফর্ম হলঃ
- Google ads
- Mail Chimp
- Google Analytics
- Facebook Ads Manager
৪. খুব দ্রুত ফলাফল
আপনি ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমে খুব দ্রুত ফলাফল পেতে পারেন।
আপনার অনলাইন বিজ্ঞাপণে আপনি ফোন নাম্বার, ওয়েব অ্যাড্রেস বা ম্যাসেঞ্জার লিংক দিয়ে দিলে খুব তাড়াতাড়ি কাস্টমারের কাছ থেকে প্রতিক্রিয়া পেতে পারেন।
এতে করে আপনার পন্যটি খুব দ্রুত বিক্রি হতে পারে।
৫. উজ্জ্বল ভবিষ্যত
আপনি যদি খুবভাবে ডিজিটাল মার্কেটিং শিখতে পারেন, তাহলে ডিজিটাল মার্কেটিং করে ইনকাম করতে পারবেন।
আর সেই ইনকামের পরিমাণটা মাসে লাখ টাকা ছাড়িয়ে যাবে। তাই আপনাকে অবশ্যই এই কাজটি খুব ভালোভাবে শিখতে হবে।
কেননা এই কাজে রয়েছে আপনার উজ্জ্বল ভবিষ্যত।
আপনি নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের পন্য বিক্রি করে বা নিজেই ডিজিটাল মার্কেটিং এজেন্সি খুলে বা ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেসে ডিজিটাল মার্কেটিং এর কাজ করে আয় করতে পারবেন।
উপসংহার – ডিজিটাল মার্কেটিং করে ইনকাম
ডিজিটাল মার্কেটিং এর ব্যাপারে আমরা জানলাম যে, এর গুরত্ব অপরিসীম।
আপনি যদি ডিজিটাল মার্কেটিং এ অনেক বেশি দক্ষ হতে পারেন, তাহলে আপনাকে আর বসে থাকতে হবে।
আপনি ডিজিটাল মার্কেটিং এর কাজগুলির মাধ্যমে নিজের ব্যবসাকে উন্নত করতে পারবেন।
এছাড়া অন্যের জন্য কাজ করে ও আপনার দক্ষতাকে বিক্রি করে সহজেই ইনকাম করতে পারবেন।
আপনার পছন্দ হতে পারে এমন আরো পোস্ট