বর্তমানে আপনি গ্রামে অনলাইন ব্যবসা করে ভালো পরিমাণ টাকা আয় করতে পারবেন।

কেননা এখন ইন্টারনেট শুধু শহরেই সীমাবদ্ধ না। সেটি এখন গ্রামে গঞ্জে বিস্তার লাভ করেছে ।

আর এই ইন্টারনেটের সহযোগিতায় আপনি এখন গ্রামে থেকেই অনলাইনে ব্যবসা করে ফ্রি টাকা ইনকাম করতে পারবেন।

এভাবে ব্যবসা করতে আপনার প্রয়োজন হবে শুধুমাত্র একটি স্মার্ট ফোন।

এর সাহায্যে আপনি ব্যবসা করে দেশের অর্থনীতি শক্তিশালী করতে পারবেন।

তাই আমরা যারা গ্রামে বাস করি, তারা কর্মসংস্থানের জন্য শহরে না যে গ্রামে থেকেই স্মার্টফোন ও মোবাইলের মাধ্যমে অনলাইনে ব্যবসা করে জীবিকা নির্বাহ করতে পারি।

এই ব্লগে আমরা এমন ৬টি অনলাইন ব্যবসা সম্পর্কে জানতে পারব। যেগুলি আমরা গ্রামে থেকে করতে পারব।

এই  ব্যবসাগুলি সম্পর্কে অত্যন্ত মনোযোগ সহকারে জানুন।

আপনি অবশ্যই এভাবে খুব ভালো পরিমাণ টাকা ইনকাম করতে পারবেন।

তবে আপনাকে অবশ্যই ইনকাম করার সঠিক উপায় জানতে হবে।

আর গ্রামে বসে  অনলাইনে ব্যবসা করা কেন করা উচিত তা দেখে নিন-

১. বর্তমানে ইন্টারনেটের বিস্তার গ্রামে ও শহরে উভয় জায়গাতেই রয়েছে।

আর গ্রামেও এখন ইন্টারনেটের স্পিড তুলনামূলক অনেক ভালো।

যার ফলে আপনি সহজেই গ্রামে বসেই অনলাইনে ব্যবসা করতে পারবেন।

২. অনলাইনে ব্যবসা করার সবথেকে ভালো দিক হলো এতে আপনার খুব বেশি ইনভেস্ট করতে হয় না।

অনেক সময় ইনভেস্ট ছাড়াই অনলাইন ব্যবসা করা যায়। অনেকেই এভাবে ব্যবসা করে দিনে ৫০০ টাকা ইনকাম করছেন।

৩. গ্রামে অনলাইন ব্যবসা করার আরো একটি ভালো দিক হলো, এটি সবাই করতে পারবেন।

গ্রামে অনলাইন ব্যবসা

বিশেষ করে গ্রামের কৃষক, ছাত্র, গৃহিণী সকলেই তাদের হাতের মোবাইল ফোন দিয়েই অনলাইন ব্যবসা করতে পারবেন।

কেননা আজকাল সকলেই মোবাইল চালানো শিখে গিয়েছে।

৪. এভাবে ব্যবসা করলে দেশে বেকারত্বের সংখ্যা কমবে আর কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে।

কেননা আজকাল পড়াশোনা শেষ করে চাকরি পাওয়াটা অনেক বেশি কঠিন হয়ে যায়, অতিরিক্ত প্রতিযোগিতার জন্য।

গ্রামে অনলাইন ব্যবসা

আপনি যদি সঠিক নিয়মে অনলাইনে ব্যবসা করতে পারেন, তাহলে সেটি শহর বা গ্রাম উভয় জায়গা থেকেই করতে পারবেন।

ব্যবসা করে সফল হওয়ার জন্য আপনাকে অবশ্যই পরিশ্রম করতে হবে।

আর সঠিক উপায় জানতে হবে। গ্রামে থেকে ঘরে বসে ইনকাম করার এমন কয়েকটি অনলাইন ব্যবসা রয়েছে, যে ব্যবসা গুলির মাধ্যমে আপনি নিজেকে সফল করে তুলতে পারবেন।

আর একটি কথা মাথায় রাখতে হবে সফলতা পাবার জন্য আপনাকে অবশ্যই পরিশ্রমী ও সৎ হতে হবে।

তবে আপনি একজন বিশ্বস্ত ব্যবসায়ী হয়ে গড়ে উঠতে পারবেন। দেখে নিন সেরা ৬টি অনলাইন ব্যবসা সম্পর্কে।

১. লেখালেখি করে আয় 

আজকাল মোবাইলে যে কেউই বাংলাতে লিখতে পারেন।

বাংলাতে লিখতে এখন আর আগের মত টাইপ করতেও হয় না।

আপনি ভয়েসের মাধ্যমে টাইপ করতে পারেন।

এভাবে আপনি লেখালেখি করে গ্রামে অনলাইন ব্যবসা করতে পারেন।

আপনি আপনার লেখা ব্লগ বা আর্টিকেলকে বিক্রি করে খুব সহজেই মাসে ১৮ হাজার টাকা পর্যন্ত ইনকাম করতে পারবেন।

এভাবে লেখালেখি করে আয় করার জন্য আপনাকে asprivate আইটিতে আবেদন করতে হবে।

আবেদন করার পর তারা আপনাকে ফ্রিতে লেখালেখি করার নিয়ম শিখিয়ে দিবেন।

এরপর আপনি তাদের আইটিতে প্রতিদিন দুটি করে ব্লগ পোস্ট বা আর্টিকেল জমা দিয়ে মাসে ১৮০০০ টাকা পর্যন্ত আয় করতে পারবেন।

আর আপনার আয়ের টাকা বিকাশ, নগদ, রকেট বা অন্য কোন পেমেন্ট মাধ্যমে নিতে পারবেন।

এভাবে আপনি আপনার লেখাকে বিনা ইনভেস্টে বিক্রি করে খুব সহজেই ফ্রি টাকা আয় করতে পারবেন।

এই সাইট থেকে আপনি প্রতিদিন পরপর পেমেন্ট নিতে পারবেন। এভাবে আপনার লেখাকে বিক্রি করে আয় করার জন্য এখনই আবেদন করুন।

২. ফেসবুকে পণ্য বা ওয়েবসাইটে পণ্য বিক্রি করে আয় 

আমরা যারা গ্রামে অনলাইন ব্যবসা করতে চাই, তাদের জন্য এটি একটি খুবই ভালো মাধ্যম হতে পারে।

এখন প্রায় সকলেই খাবার জিনিস থেকে শুরু করে জামাকাপড় সবই অনলাইনে অর্ডার করে।

আপনি এই সুযোগটিকে কাজে লাগিয়ে অনলাইনে মধু, চাল, আম, হাতে বানানো কারুকার্য, হাতে বানানোর লুঙ্গি ও শাড়ি ইত্যাদি বিক্রি করে আয় করতে পারেন।

এভাবে এসব পণ্য বিক্রি করার জন্য আপনি ফেসবুকে একটি পেজ খুলতে পারেন।

এরপর সেই পেজের মাধ্যমে প্রচারণা করে ভালো পরিমাণ অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।

আর আপনার যেহেতু অনলাইনে ব্যবসা তাই কারেন্ট বিল, ঘর ভাড়া, শ্রমিক বেতন ইত্যাদি থেকে আপনি বেঁচে যাবেন।

ফেসবুক ছাড়াও আপনি একটি ই-কমার্স ওয়েবসাইট খুলে তাতে আপনার পণ্যের ছবি দিয়ে প্রতারণা করে তা অনলাইনের মাধ্যমে বিক্রি করে আয় করতে পারবেন।

আর আজকাল সহজেই shopify বা wordpress দিয়ে যেকোনো ই কমার্স ওয়েবসাইট তৈরি করা যায়। ওয়েবসাইট তৈরীর প্রক্রিয়া বিভিন্ন ফ্রি কোর্স বা সরাসরি ইউটিউব ভিডিওর মাধ্যমে দেখে শিখে নিতে পারেন।

এভাবে আপনি পণ্য বিক্রি করে মাসে ৩০ হাজার টাকা ইনকাম করতে পারেন।

৩. অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং  – গ্রামে অনলাইন ব্যবসা 

এটা এমন একটি ব্যবসা যেখানে আপনাকে অন্যের পণ্য বিক্রি করে ইনকাম করতে হয়।

অনেক ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান রয়েছে যারা তাদের পণ্য বিক্রি করিয়ে দেওয়ার বিনিময়ে কমিশন দিয়ে থাকে।

আপনি সে সকল ওয়েবসাইটে যুক্ত হয়ে তাদের পণ্যের অ্যাফিলিয়েট লিংক সংগ্রহ করে আপনার সোশ্যাল মিডিয়া, ইউটিউব, ওয়েবসাইট ইত্যাদির মাধ্যমে প্রচারণা করতে পারেন।

এরপর সেই অ্যাফিলিয়েট লিংক এর মাধ্যমে পণ্যের মোট দামের ২% থেকে ২০% পার্সেন্ট পর্যন্ত কমিশন ইনকাম করতে পারেন।

এই ব্যবসা করে আপনি প্রতি মাসে ৫০ হাজার টাকা ইনকাম করতে পারবেন। আর এটি একটি প্যাসিভ ইনকাম প্রক্রিয়া।

তবে শুরুতেই যে আপনি অনেক বেশি পরিমাণ টাকা আয় করতে পারবেন এমনটা না।

আপনি ধীরে ধীরে আপনার ইনকামকে বাড়িয়ে নিতে পারবেন। আপনার আয় কি তো অর্থ সরাসরি ব্যাংক একাউন্টের মাধ্যমে তুলে নিতে পারবেন।

কয়েকটি সেরা অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে আয় করার ওয়েবসাইট হল –

৪. কৃষি পণ্য বিক্রি করে 

আমরা যারা গ্রামে থাকি, তাদের প্রায় প্রত্যেকেই ফসল করা বা গবাদি পশু পালন করা সম্পর্কে অনেক ভালো অভিজ্ঞতা থাকে।

আর ফসলের জন্য জৈব সার গবাদি পশুর জন্য ভালো খাদ্য ইতারে প্রচুর চাহিদা থাকে।

আপনি চাইলে এগুলি অনলাইনে বিক্রি করে টাকা আয় করতে পারেন। এভাবে ঘরে বসে মাসে ১৫-২০ হাজার টাকা আয় করতে পারেন।

কেননা এই খাবারগুলির প্রচুর চাহিদা। আর অনলাইন যেহেতু অনেক সহজলভ্য হয়ে গেছে।

তাই আজকাল মানুষ অনলাইনে এসব বেশি অর্ডার করে থাকে। আপনিও চাইলে এই পণ্যগুলি অনলাইনে ফেসবুক পেজের মাধ্যমে বিক্রি করে ইনকাম করতে পারবেন।

আর আপনারা কিছু টাকা সরাসরি বিকাশ, নগদ, রকেট, পেটিএম, ফোন পে ইত্যাদিতে নিতে পারেন।

তাই বলা যায় কৃষি পণ্য বিক্রি করে ইনকাম একটি অন্যতম সেরা গ্রামে অনলাইন ব্যবসা।

৫. ডিজিটাল কনটেন্ট ক্রিয়েশন করে 

আপনি একজন সফল ব্যবসায়ী হওয়ার জন্য গ্রামে বসে একটি ইউটিউব চ্যানেল খুলতে পারেন।

সেখানে আপনি গ্রামীণ পরিবেশে রান্নার রেসিপি দেখিয়ে, কৃষিকাজ, মাছ চাষ, গবাদিপশু পালনের টিপস ইত্যাদি দেখিয়ে ইউটিউবে ভিডিও আপলোড করতে পারেন।

আর এখন প্রায় প্রত্যেকটি মোবাইলের ক্যামেরা অনেক ভালো হয়।

এই মোবাইলগুলো দিয়ে খুব সহজেই ভিডিও এডিট করা যায়।

আপনি এভাবে মোবাইলের মাধ্যমে ভিডিও ইউটিউবে আপলোড করে গ্রামে অনলাইন ব্যবসা করতে পারেন।

এক্ষেত্রে আপনার তেমন কোন মূলধনের প্রয়োজন হবে না।

৬. অনলাইন টিউশন 

আজকাল গ্রামেও ছাত্ররা অনলাইনে শিক্ষকদের কাছ থেকে পড়া শিখে থাকেন।

কেননা এখন স্মার্টফোনের প্রচুর সহজলভ্যতা হয়েছে।

আপনি যদি যেকোনো বিষয়ে খুব এক্সপার্ট বাহ ভালো ধারণার যোগ্য হয়ে থাকেন তাহলে আপনি অনলাইনে স্কুল বা কলেজের ছাত্রদের পড়িয়ে টাকা ইনকাম করতে পারবেন।

এভাবে আপনি প্রতি সপ্তাহে ৪০০০ টাকা পর্যন্ত আয় করতে পারবেন।

এক্ষেত্রে আপনি zoom বা google meet এর মাধ্যমে একসাথে অনেক ছাত্রকে অনলাইনে পড়াতে পারবেন।

এছাড়া আপনি যদি ফ্রিল্যান্সিং কোন কাজে অনেক দক্ষ হয়ে থাকেন, তাহলে অন্যদের সেই ফ্রিল্যান্সিং দক্ষতা শিখিয়ে কোর্স আকারে টাকা নিতে পারেন।

এভাবে আপনি বিকাশ, নগদ, রকেট ফোন পে, পেটিএম ইত্যাদিতে টাকা নিতে পারবেন।

FAQ – গ্রামে অনলাইন ব্যবসা 

১. কয়েকটি সেরা অনলাইন ব্যবসা কি কি?

সেরা অনলাইন ব্যবসা গুলি হল ফ্রিল্যান্সিং, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং, ফেসবুকে পণ্য বিক্রি, কৃষি পণ্য বিক্রি, অনলাইন টিউশন ইত্যাদি। 

২. অনলাইন ব্যবসা করতে কি অনেক বেশি ইনভেস্ট করতে হয়? 

না, আপনি অনলাইনে খুব অল্প ইনভেস্টে বা বিনা ইনভেস্টে ব্যবসা করে খুব ভালো পরিমাণ টাকা আয় করতে পারবেন 

উপসংহার – গ্রামে অনলাইন ব্যবসা 

আপনি চাইলে গ্রামে থেকেই যেকোনো অনলাইন ব্যবসা করে খুব ভালো পরিমাণ টাকা আয় করতে পারবেন।

গ্রামীন পরিবেশে কাজের গতিও অনেক বাড়ে। কেননা গ্রামে শহরের মতো কোলাহল নেই।

আপনি ঠান্ডা মাথায় পরিশ্রম করে এখানে আপনার অনলাইন ব্যবসা খুব ভালোভাবে দাঁড় করাতে পারবেন।

আর আপনার ব্যবসাকে আপনি আপনার পরিশ্রমের মাধ্যমে ও সৎ  থাকার মাধ্যমে উন্নয়ন ঘটাতে পারবেন।

এভাবে গ্রামে প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার করে হাতে থাকা মোবাইল দিয়ে ব্যবসা করে ভালো পরিমাণ টাকা উপার্জন করে দেশের অর্থনীতির উন্নয়নে অনেক বড় ভূমিকা রাখতে পারবেন।

এই পোস্টটি শেয়ার করুন