বেঁচে থাকার জন্য আমাদের দরকার টাকা। অনেকেই মাসে ৩০ হাজার টাকা আয় করার উপায় জানতে চায়।
আপনি হয়তো চিন্তা করছেন কিভাবে তা সম্ভব। আপনি কি জানেন আপনি চাইলে খুব সহজেই দিনে ১০০০ টাকা ইনকাম করতে পারবেন। যা মাসে গিয়ে দাঁড়াবে ৩০ হাজার টাকা। এটা কোন রকেট সাইন্স নয়।
আমরা কিন্তু একটু চেষ্টা করেলেই তা করে দেখাতে পারব। আমাদের মধ্যে অনেকেই আছি যারা প্রতিনিয়ত চাকরির পেছনে ছুটছি।
কিন্তু আমাদের মত দেশে চাকরির বাজার অনেক কঠিন।
চাকরি না পেয়ে আমরা বছরের পর বছর বেকার জীবন কাটাচ্ছি। কিন্তু আমরা নিজেরা একটু পরিশ্রম ও চেষ্টার মাধ্যমেই অনলাইনে কাজ করে মাসে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করতে পারব।
এর জন্য আমাদের প্রয়োজন একটি স্মার্টফোন ও ভালো গতির ইন্টারনেট। ইন্টারনেট থেকে প্রথমদিকে আমরা দিনে ২০০ টাকা ইনকাম করতে পারব।
আর ধীরে ধীরে সেই আয়টিকেই আবার বাড়িয়ে তা মাসে ৫০ হাজার টাকা আয় করতে পারব।
আপনি যদি মনে করেন, আপনি আয় করতে পারবেন। আপনার দ্বারা পরিশ্রম করে ও টেকনিক অবলম্বণ করে আয় করা সম্ভব।
তাহলে আপনি অবশ্যই পারবেন। মনে রাখবেন মাসে ৩০ হাজার টাকা ইনকাম করা আহামরি কোন কঠিন কাজ নয়। অনেকেই যদি অনলাইনে এই পরিমাণ টাকা ইনকাম করতে পারে, তাহলে আপনিও কেন পারবেন না? আপনিও পারবেন।
একটু প্রচেষ্টা ও সঠিক দিক নির্দেশনাতে ঘুচে যেতে পারে আপনার বেকারত্ব। তাহলে দেখে নিন অনলাইনে প্রতি মাসে ৩০ হাজার টাকা আয় করার উপায়গুলি-
১. অনলাইনে ছবি বিক্রি করে আয়
ছবি বিক্রি করে আয় করার মত সহজ কাজ আর একটিও নেই। আর আপনার কাছে এটা ফেক মনে হতে পারে। কিন্তু আপনার ধারণাতেও নেই যে।
শুধুমাত্র অনলাইনে ছবি বিক্রি করে আপনি মাসে ৩০ হাজার টাকা আয় করতে পারেন। ধীরে ধীরে এর থেকেও বেশি পরিমাণ ইনকাম করতে পারবেন।
এর জন্য আপনার কিছুই থাকতে হবেনা। শুধুমাত্র একটা স্মার্টফোন থাকলেই হবে।
আজকাল প্রায় সকল ফোনের ক্যামেরাই ভাল হয়।
আপনি শুধু আপনার চোখের সামনে যা দেখতে পারেন। তার ছবি তুলতে থাকুন। যেমন গাছ, নদী, পাখি, ঘরবাড়ি সবকিছু।
তবে এই ছবিগুলি অনেক সুন্দর করে তুলতে হবে। আপনার এই ছবি গুলি বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ কিনে নেবে। আর বিনিময়ে আপনাকে টাকা দেওয়া হবে।
বিভিন্ন ছবি বিভিন্ন লোকজন তাদের ব্যবসা, ওয়েবসাইট, প্রজেক্ট ইত্যাদি কাজে আপনার কাছ থেকে কিনে নেবে।
এখন প্রশ্ন হল আপনি কিভাবে আপনার তোলা ছবি অনলাইনে বিক্রি করতে পারবেন।
অনলাইনে ছবি বিক্রির উপায়
অনলাইনে বিভিন্ন ওয়েবসাইট আছে। যারা ছবি কেনা বেচা করে। তারা আপনার ছবি সেখানে নিবে।
আর সেই ছবি তাদের ওয়েবসাইটে দেখাবে। আর সেই ছবি বিক্রি হলে তারা আপনাকে টাকা দিবে।
এই রকম কয়েকটি ওয়েবসাইট হল-
- Depositphotos
- Pond5
- Gettyimages
- 500px
এই ওয়েবসাইট গুলিতে প্রথমে আপনাকে জয়েন হতে হবে।
এরপর এখানে আপনার তোলা ছবিগুলি তাদের ওয়েবসাইটে আপলোড করতে হব। তারা আপনার ছবিগুলি বিক্রি করে আপনাকে টাকা দিবে।
সেই টাকা আপনি খুব সহজেই আপনার হাতে নিয়ে আসতে পারবেন। আপনি যত বেশি ছবি তুলে আপলোড দিবেন। আপনি তত বেশি ফ্রি ডলার ইনকাম করতে পারবেন।
২. ফ্রিল্যান্সিং করে ইনকাম – মাসে ৩০ হাজার টাকা আয়
এক বেসরকারি তথ্য মতে বাংলাদেশে প্রায় ৬ থেকে ৭ লক্ষ ফ্রিল্যান্সার আছে। আর তারা বছরে ১০ হাজার ৬০০ কোটি টাকার মত আয় করতে শুধুমাত্র ফ্রিল্যান্সিং করে।
এটা একটা বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের কারবার। ফ্রিল্যান্সিং এর চাহিদা আগামী ৫০ বছরেও কমেবনা।
কেননা এখনও পৃথিবীতে অনেক ফ্রিল্যান্সাররের ঘাটতি আছে।
আর আপনিও এই ফ্রিল্যান্সিং করে অনায়েসেই মাসে ৩০ হাজার টাকা আয় করতে পারবেন। শুধু তাই নয়। একটা সময় শুধুমাত্র ফ্রিল্যান্সিং করে মাসে লাখ টাকা পর্যন্ত আয় করতে পারবেন।
কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করবেন
যেভাবে মোবাইল দিয়ে খুব সহজেই ফ্রিল্যান্সিং শুরু করবেন-
১. ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য আপনার একটি কম্পিউটার প্রয়োজন হবে। ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ এখন মোবাইল দিয়েও করা যায়।
২. এরপর আপনাকে অনলাইনে চাহিদা আছে, এই রকম কাজ শিখতে হবে। যেমন- ডাটা এন্ট্রি, টাইপিং, ওয়েব ডিজাইন, গ্রাফিক্স ডিজাইন, ডিজিটাল মার্কেটিং ইত্যাদি।
৩. এই কাজগুলি শেখার জন্য আপনি ইউটিউব দেখে বা কোর্স করে ৩ মাস ট্রেনিং নিতে হবে।
৪. এরপর কাজের জন্য Upwork, Fiverr, Freelancer সহ বিভিন্ন মার্কেটপ্লেসে আবেদন করতে হবে।
আপনি একবার কাজ করা শুরু করলে, আপনাকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হবে না। আপনি প্রতিমাসে অনায়েসেই ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা আয় করতে পারবেন। এই ইনকাম ভবিষ্যতে বাড়তেই থাকবে।
৩. ইউটিউব চ্যানেল খুলে আয়
আপনার হাতে যদি একটি স্মার্টফোন থাকে। তাহলে আপনি সেই ফোন দিয়ে ভিডিও করে খুব সহজেই আয় করতে পারবেন।
এখন মানুষ ভিডিও কেন্দ্রিক হয়ে গেছে। যেকোন কিছু সার্চ করতে এখন ইউটিউবে ঢোকে।
এছাড়া বিনোদন, শিক্ষা, খেলা ইত্যাদি দেখতে ইউটিউব ব্যবহার করে। আপনি চাইলেই যেকোন ধরনের ভিডিও দেখাতে পারেন।
ধরুন আপনি রান্না ভাল পারেন। তাহলে আপনি রান্নার ভিডিও দিতে পারেন। অথবা আপনি টেক ভিডিও, বাগানের ভিডিও, খবরের ভিডিও, বায়োগ্রাফি ইত্যাদি নানা ধরনের ভিডিও বানিয়ে তা থেকে আয় করতে পারেন।
কারণ এই ভিডিওগুলি ইউটিউবে দিলে আপনি অ্যাডের মাধ্যমে টাকা আয় করতে পারবেন।
ইউটিউব আয় করার উপায় জেনে নিন-
ইউটিউব থেকে আয়ের পদ্ধতি
দেখে নিন কিভাবে ইউটিউব থেকে আয় করতে হয়-
১. প্রথমে একটি ইউটিউব চ্যানেল খুলতে হবে। আপনি যে বিষয় পছন্দ করেন। সেই বিষয়ের উপর চ্যানেল খুলুন।
২. আপনি টানা ২ মাস ভিডিও আপলোড করতেই থাকুন।
৩. আপনার ভিডিও যেন ১০০ ভাগ ইউনিক হয় সেদিকে খেয়াল রাখুন।
৪. এরপর ৪০০০ ঘন্টা ওয়াচটাইম ও ১ হাজার সাবস্ক্রাইবার হলে গুগল অ্যাডসেন্সের জন্য আবেদন করুন।
৫. গুগল থেকে অ্যাডসেন্স আবেদন অ্যাপ্রুভ হয়ে গেলে আপনার ভিডিওতে অ্যাড লাগান। এরপর কিছুদিনের মধ্যেই আপনার অ্যাড থেকে টাকা আসা শুরু হবে।
৬. এভাবে আপনি নিয়মিত ভিডিও দিতে থাকুন। একটা সময় পর দেখবেন আপনার প্রতি মাসে ৩০ হাজার টাকা আয় হওয়া শুরু হয়ে গেছে।
এই প্রক্রিয়াটা খুবই সহজ। আপনি ধীরে ধীরে কয়েক লাখ টাকা পর্যন্ত ইনকাম করা শুরু করতে পারবেন।
৪. ফেসবুকের মাধ্যমে ইনকাম
ফেসবুক হল টাকার মেশিন। ফেসবুক থেকে যে কি পরিমাণ টাকা ইনকাম করা যায়। তা কল্পনার বাইরে। আপনি এর মাধ্যমে নানা উপায়ে ইনকাম করতে পারবেন। ফেসবুক থেকে মাসে ৩০ হাজার টাকা ইনকাম করার উপায় জেনে নিন-
ফেসবুকের মাধ্যমে পন্য বিক্রি করে
আপনি ফেসবুক পেজ খুলে সেটা দিয়ে অনেক টাকা আয় করতে পারবেন।
এই পেজের মাধ্যমে আপনি যেকোন পন্য বিক্রি করতে পারবেন।
ফেসবুকে প্রতিদিন লাখ লাখ মানুষ ঢোকে। আর আপনি এই লাখ মানুষের ভেতর খুব সহজেই আপনার পন্য বিক্রি করতে পারবেন।
এ জন্য আপনার পন্য রিলেটেড একটি পেজ খুলুন।
এরপর সেই পন্যগুলির ছবি বা ভিডিও ও মূল্য শেয়ার করুন।
এগুলো দেখে কেউ পছন্দ করলে তা তখন কিনবে।
আর আপনি লাভ করতে পারবেন। এভাবে আপনি খুব সহজে আয় করতে পারবেন।
ফেসবুকে ভিডিও আপলোড করে
ইউটিউবের মত ফেসবুকেও ভিডিও দিয়ে টাকা ইনকাম করা যায়।
আপনি যেকোন ভিডিও বানিয়ে তা ফেসবুক পেজ থেকে আপলোড দিতে পারেন।
আর সেই সেটিতে ফেসবুক মনিটাইজেশনের মাধ্যমে অ্যাড লাগিয়ে টাকা আয় করতে পারবেন।
এভাবে আপনি অনায়েসেই আয় করতে পারবেন। আর দিন দিন আপনার ইনকাম বাড়তেই থাকবে।
ফেসবুক Reels এরমাধ্যমে
ফেসবুকে যে ছোট ছোট ভিডিও গুলি দেখা যায়। সেগুলিকে রিলস বলে।
এই রিলস ভিডিওগুলি খুবই তাড়াতাড়ি ভাইরাল হয়। আপনি চাইলে শুধুমাত্র এই ছোট ছোট ভিডিওগুলি বানিয়ে টাকা ইনকাম করতে পারবেন। এইভাবে ভিডিও বানানো খুবই সহজ।
আপনার অন্যের ভিডিও কিছুটা মডিফাই করে আপনার নিজের গলা দিয়ে এই ভিডিও বানাতে পারবেন।
আর ভিডিও এর লেন্থ হতে হবে ১ মিনিট। এই ভিডিও গুলিতেও অ্যাড লাগানো যায়।
আপনি ফেসবুক রিলস থেকে খুব সহজেই টাকা আয় করতে পারবেন।
৫. ব্লগ বা আর্টিকেল লিখে ইনকাম – মাসে ৩০ হাজার টাকা আয় করার সেরা উপায়
এর থেকে আর সহজ কাজ হয়না। লিখতে তো সবাই পারে।
আপনিও নিশ্চয় লিখতে পারেন। আর আপনি ব্লগ লিখে আয় করতে পারবেন। এর জন্য লাগবে একটি ওয়েবসাইট।
আপনি ওয়ার্ডপ্রসের মাধ্যমে একটি ব্লগ একটি ওয়েবসাইট খুলে নিন।
এরপর সেই ওয়েবসাইটে আপনি যা জানেন তা লিখতে থাকুন। যেমন-গল্প, উপন্যাস, টেক নিউজ, রান্নার নিয়ম ইত্যাদি নানা বিষয়ে লিখতে থাকুন। এক সময় যখন দেখবেন যে, আপনার অনেক লেখা হয়েছে।
আর ধীরে ধীরে আপনার লেখা অনেকেই পড়ছে।
তখন আপনি আপনার এই ওয়েবসাইটে গুগল এডসেন্সের মাধ্যমে ইনকাম করতে পারবেন।
কিন্তু দিন যতই গড়াবে। আপনার ইনকাম বাড়তেই থাকবে।
এভাবে ২ মাসের মধ্যে আপনার খুব ভালো ইনকাম শুরু হয়ে যবে। আর ৬ মাসের মধ্যে আপনার ইনকাম আরো বাড়বে। তবে আপনাকে প্রতিদিন লিখে যেতে হবে। অধৈর্য্য হলে হবে না। একটা সময় দেখা যাবে আপনি মাসে ৩০ হাজার টাকা আয় করতে পারছেন। অথবা এর থেকেও বেশি টাকা আয় করতে পারছেন।
এছাড়াও আপনি বাংলাতে ব্লগ লিখে মাসে ১৮০০০৳ ইনকাম করতে পারেন, Asprivate আইটির মাধ্যমে।
৬. ডিজিটল মার্কেটিং করে আয় – মাসে ৩০ হাজার টাকা আয় করার সেরা উপায়
আপনার যদি প্রতিমাসে ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা ইনকাম করার উপায় জানার আগ্রহ থেকে থাকে। তাহলে আপনি ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমে তা খুব সহজেই করতে পারবেন। ডিজিটাল মার্কেটিং এর ক্ষেত্রটা অনেক বড়। আপনাকে যেকোন একটি ক্ষেত্রে খুবই ভাল দক্ষ হতে হবে। ডিজিটাল মার্কেটং এর ক্ষেত্রগুলি হল-
- সোস্যাল মিডিয়া মার্কেটিং
- ইমেইল মার্কেটিং
- অ্যাফেলিয়েট মার্কেটিং
- ড্রপশিপিং
- এসইও
- ই কমার্স মার্কেটিং
- কন্টেন্ট মার্কেটিং ইত্যাদি।
আপনাকে যেকোন একটি বিষয়ে খুবই পরদর্শী হতে হবে। এর জন্য প্রথমে আপনাকে ডিজিটাল মার্কেটিং এর যেকোন একটি সেক্টর ভালভাবে শিখতে হবে।
আর মার্কেটে ডিজিটাল মার্কেটিং এর ব্যপক চাহিদা। আপনি ডিজিটাল মার্কেটিং শিখলে আপনাকে আর বসে থাকতে হবেনা। আপনি একের পর এক কাজ পেতেই থাকবেন।
আর ডিজিটাল মার্কেটিং করে আপনি অনায়েসেই প্রতি মাসে ৩০ হাজার টাকা আয় করতে পারবেন। আপনি Asprivate থেকে ডিজিটাল মার্কেটিং শিখে করে মাসে লাখ টাকা পর্যন্ত ইনকাম করতে পারবেন।
রিলেটেডঃ ডিজিটাল মার্কেটিং কি? ডিজিটাল মার্কেটিং করে ইনকাম করার উপায়
শেষ কথা – মাসে ৩০ হাজার টাকা আয়
আপনি তো এখন এভাবে টাকা ইনকাম করার উপায় শিখে গেলেন। এখন আপনিই চিন্তা করুন আপনি কোন কাজটি করে আয় করতে চাচ্ছেন।
আপনি সঠিকভাবে কাজ শিখে কাজ করলে আপনার ইনকাম ৩০ হাজার থেকে ৫০ হাজারে উন্নিত হবে।
৫০ হাজার থেকে কয়েক লাখে আপনার ইনকাম নিয়ে যেতে পারবেন।
তবে শর্ত একটাই। লেগে থাকুন। হাল ছাড়বেন না। আর সব কিছুকেই খুব সহজভাবে নিন।
আপনার পছন্দ হতে পারে এমন আরো পোস্ট