ফাইবারে কাজ পাওয়ার জন্য সঠিকভাবে ফাইবারে গিগ খোলার নিয়ম জানা জরুরী।
আপনার ফাইবার একাউন্টের সফলতা নির্ভর করে এর গিগের উপর।
বিশেষ করে নতুনদের জন্য এটি খুবই গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
যে ফ্রিল্যান্সার যত সুন্দর করে গিগ খুলতে পারে, তার ফাইবারে কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা তত বেশি থাকে।
এই ব্লগে আপনারা জানতে পারবেন, ফাইবার গিগ কি ও ফাইবারে গিগ তৈরীর পদ্ধতি সম্পর্কে।
ফাইবার হল অনেক বড় এবং জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস। এই মার্কেটপ্লেসে প্রচুর পরিমাণ কাজ পাওয় যায়।
আপনি যেকোন কাজে অনেক দক্ষ হলে সহজেই ফাইবার থেকে ইনকাম করতে পারবেন।
এই পোস্টে যা যা থাকছে-
ফাইবার গিগ কি?
Fiverr এর গিগ (gig) এর সম্পর্কে সকল ফাইবার ফ্রিল্যান্সারেরা জেনে থাকে।
ফাইবারে প্রোফাইল তৈরি করা হয়ে গেলে গিগ খুলতে হয়।
আপনি যে কাজ পারেন সেই কাজের বর্ণনা, সেই কাজে আপনি কি কি সেবা দিয়ে থাকেন।
আপনার সেই কাজের রেট কত এগুলোর বিস্তারিত করে তথ্য দেওয়াকে গিগ বলে।
সহজ কথায় আপনি কি কাজ পারেন। আপনার কাজের রেট কত। এগুলির বিস্তারিত তথ্য দেওয়াকেই গিগ (gig) বলে।
নিচের লিংকে ক্লিক করে ফাইবারের গিগের উদাহরণগুলি গুলি দেখে নিন-
আপনি প্রথম অবস্থায় ফাইবারে একসাথে ২০টি গিগ তৈরি করতে পারেন।
আরো পড়ুনঃ ফাইবার থেকে টাকা ইনকাম করার উপায়
ফাইবারের গিগে কি কি থাকে?
একটি সুন্দর ও আকর্ষণীয় গিগ আপনাকে ফাইবারে কাজ পেতে সাহায্য করবে।
আপনি যদি সঠিকভাবে গিগ খুলতে পারেন। তাহলে ফাইবার আপনার গিগটিকে উপরের দিকে দেখাবে।
দেখে নিন একটি গিগে কি কি থাকে-
- কাজের টাইটেল
- ক্যাটাগরি
- ট্যাগ
- প্রাইসিং
- কাজের বর্ণনা
- বায়ার কি ধরনের প্রশ্ন করতে পারে, সেটার কয়েকটি প্রশ্ন ও উত্তর।
- গিগের জন্য কয়েকটি ছবি। এর মধ্যে আপনার গিগের ওয়ালে দেখাবে এমন একটি ছবি। আর পোর্টফোলিও এর কয়েকটি ছবি।
- আপনার কাজের কিছু ভিডিও
- আপনার কাজের ডকুমেন্ট pdf ফাইল আকারে
সঠিক পদ্ধতিতে ফাইবারে গিগ খোলার নিয়ম
ফাইবারে কাজের অর্ডার পাওয়ার জন্য, এর গিগ আকর্ষনীয় হতে হবে। এর জন্য সঠিক উপায়ে ফাইবারে গিগ তৈরীর পদ্ধতি জানতে হবে। নিচে ফাইবারে গিগ খোলার উপায় দেখে নিন-
১. টাইটেল দেওয়াঃ গিগ তৈরির জন্য প্রথমে গিগ টাইটেল দিতে হবে। টাইটেলে আপনি যে কাজ পারেন তা ৮০ ওয়ার্ডের মধ্যে লিখতে হবে।
২. ক্যাটাগরিঃ গিগের একটি ক্যাটাগরি ও সাব ক্যাটাগরি দিতে হবে।
৩. ট্যাগঃ এরপর আপনার গিগের কাজ রিলেটেড কিছু ট্যাগ দিতে হবে।
৪. প্রাইসিং বা কাজের মূল্যঃ এরপর আপনার গিগের প্রাইসিং দিতে হবে। অর্থাৎ আপনার কাজের জন্য আপনি কত টাকা নিবেন। তার বর্ণনা এতে দিতে হবে।
৫. গিগের বর্ণনাঃ এরপর আপনার গিগের বর্ণনা দিতে হবে। সেখানে আপনি আসলে কি কি পারেন।
আপনি কখন অনলাইনে থাকেন। আপনি কত ঘন্টা কাজ করেন এসকল কিছু বর্ণনা আকারে লিখতে হবে।
৬. FAQ বা কিছু প্রশ্ন ও উত্তরঃ গিগের জন্য FAQ দিতে হবে। এখানে কমপক্ষে ৬ টি FAQ দিলে ভাল। আপনার গিগ সম্পর্কে কিছু প্রশ্ন যা বায়ার আপনাকে করতে পারেন। সেই রকম প্রশ্ন ও উত্তর আপনাকে দিয়ে দিতে হবে।
৭. ছবি ও ভিডিওঃ আপনার গিগের জন্য কিছু ছবি, ভিডিও ও ডকুমেন্ট দিতে হবে। ছবির সর্বোচ্চ সাইজ ৫ mb এর মধ্যে হতে হবে। ছবিগুলির মধ্যে একটি ছবি হতে হবে প্রধান ছবি।
যেখানে আপনার গিগের বর্ণনা থাকবে। আর বাকি ছবিগুলি হতে হবে পোর্টফোলিও ছবি। কমপক্ষে ৫টি ছবি দিলে খুব ভাল হয়। ছবি ১২৮০x769px হলে ভাল হয়।
এরপর একটি ভিডিও সেট করতে হবে। ভিডিওতে আপনার কাজের পোর্টফোলিও দেখাতে হবে। ভিডিও এর সাইজ ৫০ mb এর মধ্যে হতে হবে। আর এটি ৭৫ সেকেন্ডের মধ্যে হতে হবে।
৮. পোর্টফোলিও বা কাজের ডেমোঃ এরপর একটি পিডিএফ ফাইলে আপনার কাজের পোর্টফোলিও গুলি দিতে হবে। পিডিএফের সাইজ ৫০ mb এর মধ্যে হতে হবে।
ফাইবারে গিগ তৈরীর সময় ছবি ও ভিডিও এর সাইজ কত হতে হবে?
গিগ খোলার সময়, এতে ছবি ও ভিডিও যুক্ত করতে হয়। তবে আপনি চাইলে ভিডিও নাও যোগ করতে পারেন। ফাইবার গিগে ছবি ও ভিডিও দেওয়ার সঠিক সাইজ হল-
১. ছবির সাইজঃ ছবির সাইজ মিনিমাম হতে হবে 712x430px। তবে 1280x769px হলে সবথেকে ভাল হয়। আর ছবির সাইজ 50 mb এর মধ্যে হতে হবে।
২. ভিডিও এর সাইজঃ ভিডিও এর সাইজ হতে হবে 50 mb এর মধ্যে। ভিডিওওটি 75 sec এর মধ্যে হতে হবে।
ফাইবার গিগ থেকে কাজ বা order পাবার জন্য যে বিষয় মানলে কাজ পাওয়া নিশ্চিত? – ফাইবারে গিগ খোলার নিয়ম
আপনাকে প্রথমত ফাইবারে গিগ খোলার নিয়ম সঠিকভাবে জেনে গিগ বানানো হবে। আর এতে আপনার কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা তত বেশি হবে। তাই সঠিকভাবে ফাইবার গিগ খুলতে হবে। ফাইবারে গিগ খুলতে যে বিষয়গুলি মনে রাখতে হবে-
১. গিগের ইউনিক টাইটেলঃ ফাইবারের গিগ থেকে অর্ডার পাওয়ার জন্য সর্বপ্রথম দেখতে হবে যে এর টাইটেল যেন ইউনিক হয়। অন্যের গিগের টাইটেল একবারে নকল করা যাবে না।
২. ফোকাস কিওয়ার্ডঃ আপনি যে কাজের উপর গিগ তৈরি করছেন।
তার জন্য একটি প্রধান কিওয়ার্ড থাকতে হবে।
সেই কিওয়ার্ড গিগের টাইটেল, ট্যাগ ও বর্ণনায় থাকতে হবে।
৩. কাজ অনুযায়ী কিওয়ার্ড সেট করাঃ যে যে কাজ এই গিগের জন্য করবেন। তা এর বর্ণনায় কিওয়ার্ড আকারে দিতে হবে।
এই কাজগুলি থেকে প্রধান প্রধান কাজগুলি গিগের টাইটেলে দিতে হবে। প্রাইসিং সেকশনের টাইটেলে আপনার গিগের প্রধান কিওয়ার্ড ও অন্যান্য কিওয়ার্ড দিতে হবে।
৪. FAQ: গিগে অবশ্যই FAQ দিতে হবে। কমপক্ষে ৬ টি FAQ দিলে খুবই ভাল হয়।
৫. গিগের ছবিঃ আপনার গিগের ছবিগুলি অনেক ক্লিয়ার হতে হবে। আর ছবিগুলি ইউনিক হলে ভাল হয়। ছবিগুলি দেখে যেন বায়ারের নজরে আসে। গিগের ছবি ফাইবারে ছবির নীতি অনুযায়ী হতে হবে।
৬. গিগের ভিডিওঃ আপনার গিগের ভিডিওটি অনেক প্রফেশনাল হতে হবে। যাতে করে বায়ার ভিডিও দেখে মনে করে যে আপনি ভালভাবে কাজটি করতে পারবেন।
৭. পোর্টফোলিওঃ গিগে অবশ্যই একটি পোর্টফোলিও এর পিডিএফ (PDF) দিতে হবে। এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
উপরের নিয়ম অনুযায়ী গিগ খুললে খুব তাড়াতাড়ি আপনি ফাইবার থেকে কাজ পাবেন। আর আপনার ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার গঠন করতে পারবেন।
উপসংহার – ফাইবারে গিগ খোলার নিয়ম
পরিশেষে একটা কথাই বলা যায়। আপনি যদি সঠিক উপায়ে ফাইবারে গিগ খোলার নিয়ম জেনে গিগ খুলতে পারেন।
তাহলে আপনার গিগ র্যাংক করবেই। আর তখন আপনি কাজ পাওয়া শুরু করতে পারবেন।
তখন আপনার জন্য সেরা মার্কেটপ্লেস ফাইবারে কাজ করে মাসে লাখ টাকা আয় করা কোন ব্যাপারই হবে না।
আপনার পছন্দ হতে পারে এমন আরো পোস্ট