মোবাইল ব্যাংকিং এর মধ্যে সবথেকে জনপ্রিয় হল বিকাশ। আজ আমরা জানব বিকাশের খরচ কমানোর উপায় সম্পর্কে।
কেননা বিকাশ অনেক জনপ্রিয় হলেও এর খরচ অন্য মোবাইল ব্যাংকিং এর তুলনায় অনেক বেশি।
এখানে টাকা উঠাতে অনেক বেশি চার্জ দিতে হয়।
তারপরেও আমাদের বিকাশ ব্যবহার করতে হয়।
কেননা এর সার্ভিস অনেক ভাল। আর এতে রয়েছে অনেক অনেক ফিচার।
বিকাশের সার্ভিস অনেক ভাল হওয়ার পাশাপাশি এতে সুযোগ সুবিধা অনেক বেশি।
ইমারর্জেন্সি লেনদেন এর ক্ষেত্রে আমরা সকলেই Bkash ব্যবহার করে থাকি।
কারণ বিকাশকে আমরা অনেক নির্ভরযোগ্য মনে করে থাকি।
এটা ব্রাক ব্যাংকের একটি সার্ভিস।
দিন দিন বিকাশের জনপ্রিয়তা বেড়েই চলেছে। কিন্তু এর প্রধান সমস্যা হল এখানে খরচ কিছুটা বেশি।
তবে কিছু টেকনিক ও নিয়ম মেনে বিকাশের খরচ কমানো সম্ভব।
দেখে নেই কিভাবে তা করা যায়।
এই পোস্টে যা যা থাকছে-
বিকাশের খরচ কমানোর উপায় গুলি দেখুন
আমাদের জীবনে বিকাশের প্রয়োজনীয়তা অনেক।
কেননা আমরা এটি দিয়ে সেন্ডমানি, ক্যাশআউট, মোবাইল রিচার্জ, পেমেন্ট, বিল পে ইত্যাদি করে থাকি।
আর বিকাশ সার্ভিস এর অ্যাপের মাধ্যমে ব্যবহার করা সহজ।
আমরা জানব বিকাশের খরচ কমানোর উপায় সম্পর্কে। বিকাশে সাধারণত ক্যাশ আউট খরচ অনেক বেশি।
এর Cash Out খরচ হাজারে ১৮ টাকা ৫০ পয়সা। এছাড়া এর Send Money খরচ অনেক বেশি হয়।। দেখে নিন কিভাবে বিকাশের এই খরচ কমিয়ে ফেলা যায়-
১. বিকাশের সেন্ডমানি (Send Money) চার্জ ফ্রি করাঃ
সেন্ডমানির মাধ্যমে বিকাশের এক একাউন্ট থেকে অন্য একাউন্টে টাকা পাঠানো যায়।
আপনি যদি ১০০ টাকা থেকে ২৫০০০ টাকা পর্যন্ত অন্য একাউন্টে টাকা পাঠান। সেক্ষেত্রে বিকাশ ৫ টাকা চার্জ কাটে।
আর ২৫০০০ টাকার উপরে টাকা পাঠালে ১০ টাকা চার্জ কাটে।
তবে আপনি এই চার্জ একদম ফ্রি করতে পারবেন প্রিয় নাম্বার ব্যবহার করে।
আমরা সাধারণত একটি প্রয়োজনীয় নাম্বারেই সেন্ডমানি বেশি করে থাকি।
এই প্রয়োজনীয় নাম্বারটি বিকাশ অ্যাপ ব্যবহার করে প্রিয় নাম্বার করে নিতে হবে। আর বিকাশ প্রিয় নাম্বারে কোন প্রকার চার্জ কাটে না। এতে সেন্ডমানি একদম ফ্রি।
বিকাশের প্রিয় নাম্বার ব্যবহার করে সেন্ডমানি চার্জ ফ্রি করা যায়।
আপনি যদি এই বিকাশের খরচ কমানোর উপায় টি ব্যবহার করে Send Money করেন, তাহলে আপনি ফ্রিতে কাউকে সেন্ড মানি করতে পারবেন।
২. বিকাশের ক্যাশ আউট চার্জ ১০ টাকা থেকে ১২.৫০ টাকা করাঃ
ক্যাশ আউট (Cash Out) করতে বিকাশের সবথেকে বেশি চার্জ কাটে। আর আমরা সাধারণত বিকাশের মাধ্যমে এই ক্যাশ আউট সবথেকে বেশি করে থাকি।
তবে এর চার্জের পরিমাণও কমিয়ে ফেলা সম্ভব কিছু টেকনিক ও কিছু নিয়ম মেনে।
আসুন দেখে নেই, বিকাশে ক্যাশ আউট করতে সাধারণত কত খরচ হয়।
ক্যাশ আউট মানে হল আপনার বিকাশ একাউন্ট থেকে টাকা বের করে আপনার হাতে পৌঁছানো। এর চার্জ নিচে দেখুন-
-
যেকোন এজেন্টের মাধ্যমে বিকাশ ক্যাশআউট চার্জঃ
সাধারণত বিকাশের ক্যাশআউট চার্জ যেকোন এজেন্ট নাম্বারের মাধ্যমে প্রতিহাজারে ১৮ টাকা ৫০ পয়সা।
-
প্রিয় এজেন্টের মাধ্যমে বিকাশ ক্যাশআউট চার্জ (Cashout Charge):
আপনি যদি ক্যাশ আউট করার সময় বিকাশ অ্যাপের মাধ্যমে যেকোন একটি এজেন্ট নাম্বার প্রিয় করেন। তাহলে আপনার প্রিয় এজেন্টে ক্যাশ আউট চার্জ কাটবে হাজারে ১৪ টাকা ৯০ পয়সা।
তবে আপনাকে প্রতিবার ক্যাশ আউট করার সময় সেই প্রিয় নাম্বারটি থেকেই ক্যাশ আউট করতে হবে।
-
এটিএম বুথের মধ্যমে বিকাশ ক্যাশআউট চার্জঃ
বিকাশের ক্যাশ আউট চার্জ এটিএম বুথের মাধ্যমেও প্রতি হাজারে কাটবে ১৪ টাকা ৯০ পয়সা। অর্থাৎ আপনি যদি এটিএম বুথের মাধ্যমে বিকাশের টাকা ক্যাশআউট বা উত্তোলন করেন।
সেক্ষেত্রে আপনার প্রতিহাজারে ১৪ টাকা ৯০ পয়সা ফি দিতে হবে। তবে এটিএম বুথ থেকে সর্বোচ্চ ৩০০০ টাকা উত্তোলন করতে হবে।
-
বিকাশ ক্যাশআউট চার্জ ১০ টাকা থেকে ১২.৫০ টাকা করাঃ
এই পদ্ধতিতে আপনি ক্যাশ আউট চার্জ অনেকটাই কমিয়ে আনতে পারছেন। এর জন্য আপনার বিকাশ একাউন্টে থাকা টাকা আপনার ব্যাংক একাউন্টে নিতে হবে। এর জন্য বিকাশ অ্যাপ থেকে বিকাশ টু ব্যাংক অপশনে যেয়ে আপনার টাকা বিকাশ থেকে ব্যাংক একাউন্টে নিয়ে নিতে হবে।
এক্ষেত্রে আপনার চার্জ কাটবে প্রতি হাজারে ১০ টাকা থেকে ১২ টাকা ৫০ পয়সা। আর আপনার টাকা ব্যাংকে ঢুকে গেলে ব্যাংক থেকে আপনি ফ্রিতে টাকা তুলে নিতে পারবেন। অগ্রণী ব্যাংক, সোনালী ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক এবং সিটি ব্যাংকে টাকা নিলে চার্জ কাটবে প্রতিহাজারে ১০ টাকা।
আর এবি ব্যাংক, কমিউনিটি ব্যাংক, আইএফসি ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক, প্রিমিয়ার ব্যাংক এবং এনআরবিসি ব্যাংকে টাকা নিলে চার্জ কাটবে ১২ টাকা ৫০ পয়সা।
এভাবে খুব সহজে বিকাশের খরচ কমানোর উপায় জেনে ক্যাশআউট চার্জ ১৮.৫০ টাকা থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত করা যায়।
৩. বিকাশ রিওয়ার্ডস ব্যবহার – সেরা বিকাশের খরচ কমানোর উপায়
আপনি বিকাশ ব্যবহারের উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন রিওয়ার্ডস পাবেন। যা বিকাশ অ্যাপ থেকে দেখতে পাবেন।
আপনি বিকাশের মাধ্যমে যত বেশি লেনদেন করবেন। আপনি তত বেশি রিওয়ার্ডস পাবেন। আপনি বিকাশ ব্যবহারের উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন লেভেলে এই রিওয়ার্ডস পাবেন।
এই রিওয়ার্ডস ব্যবহার করে আপনি ক্যাশইন, মোবাইল রিচার্জ, বিল পে ইত্যাদি তে ২০ টাকা থেকে শুরু করে ১০০ টাকা পর্যন্ত ক্যাশব্যাক পাবেন।
এতে আপনার বিকাশ ব্যবহারের অনেক টাকা বেচে যাবে।
আরো পড়ুনঃ বিদেশ থেকে বিকাশে টাকা পাঠানোর উপায়
৪. বিকাশ My offers ব্যবহার করে, বিকাশের খরচ কমানোর উপায়
বিভিন্ন বিকাশ ব্যবহারকারীদের তাদের ব্যবহারের উপর ভিত্তি করে অফার দেওয়া হয়। এই অফার বিকাশ অ্যাপের Myoffers অপশনে দেখা যাবে।
এই অপশন ব্যবহার করে ব্যাংক থেকে বিকাশে, কার্ড থেকে বিকাশে টাকা আনতে ১০০ টাকা পর্যন্ত ক্যাশব্যাক পাওয়া যাবে।
এছাড়া মোবাইল রিচার্জ ও ক্যাশ ইন করার ক্ষেত্রেও ক্যাশব্যাক পাওয়া যাবে।
এই অফার একেক বিকাশ ব্যবহারীদের মধ্যে একেক রকমের হয়ে থাকে। এভাবে My offers ব্যবহার করে সহজেই বিকাশের খরচ কমানো সম্ভব।
উপসংহার – বিকাশের খরচ কমানোর উপায়
বিকাশের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির সাথে সাথে এর ব্যবহারকারীর সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে।
কারণ, এতে প্রতিদিন নানা রকের ফিচার যুক্ত হচ্ছে।
তবে প্রত্যেক ব্যবহারকারীদের মধ্যে একটাই অভিযোগ শুনতে পাওয়া যায়।
বিকাশের খরচ অনেক বেশি। বিশেষ করে বিকাশের ক্যাশ আউট চার্জ অনেক বেশি। তবে আপনি যদি উপরের নিয়ম অনুসরণ করে এটি ব্যবহার করেন।
তাহলে এর খরচ অনেকটাই কমানো সম্ভব।
বিকাশের খরচ কমানোর উপায় ব্লগটি পড়ে যদি আপনার ভালো লেগে থাকে বা আপনি যদি সামান্য উপকৃত হয়ে থাকেন।
তাহলে ব্লগটি শেয়ার করে অন্যদের জানার সুযোগ করে দিন।
আপনার পছন্দ হতে পারে এমন আরো পোস্ট