আমরা অনেকেই অনলাইনে বা ফেসবুকে ফ্রী বসে থাকি। দৈনিক ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা ইনকাম করার উপায় জানা থাকলে এভাবে ফ্রী বসে থাকতে হতো না। দিনে এই পরিমাণ টাকা আয় করা কিন্তু খুব একটা ব্যাপার না। ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা খুবই কম টাকা।
কিন্তু আমরা যদি অনলাইনে বসে সময় নষ্ট না করে। এই সময়ে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা আয় করি। তাহলে সেটা দারুণ হয়। আপনি এই টাকাতে আপনার হাত খরচ চালাতে পারেন। আবার আপনি এই টাকা দিয়ে কিছু প্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে পারবেন।
আর এভাবে লেগে থাকলে আপনি মাসে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করা শুরু করে দিতে পারবেন। আপনি যদি চালাক হয়ে থাকেন। তাহলে লেখাটি খুব ভাভাবে পড়ে জানতে পারবেন কিভাবে দৈনিক ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা ইনকাম করা যায়। তাহলে দেখে নেওয়া যাক। কিভাবে আপনি তা করতে পারবেন।
অবশ্যই পড়ুনঃ
দৈনিক ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা ইনকাম করার উপায়
আপনি হয়তো অনলাইন থেকে প্রতিদিন ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা আয় করতে চাচ্ছেন। কিন্তু আপনি বুঝে উঠতে পারছেন না। কিভাবে শুরু করবেন। কারণ অনলাইনে ধোঁকার ছড়াছড়ি। আপনাকে আসল উপায় কেউ বলে দিবেনা। অথবা অনেক অ্যাপের ফাঁদে পড়ে আপনার সময় নষ্ট হতে পারে।
তাই আপনাকে সঠিক উপায়টি জানতে হবে। আর আপনাকে শিখতে হবে কিভাবে খুব সহজে টাকা ইনকাম করে হয়। চলুন দেখে নেই কিভাবে দিনে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা আয় করা যায়।
১) টি শার্ট ডিজাইন করে
আপনি হয়তো ডিজাইন শুনে অনেক ঘাবরে গেছেন। ভয় পাবার কিছু নেই টি শার্ট ডিজাইন করতে আপনাকে কোন গ্রাফিক্স ডিজাইন শিখতে হবেনা। আবার কোন অ্যাপের মাধ্যমেও তা করতে হবেনা। এখানে আপনাকে খুবই সাধারণ কাজ করতে হবে।
একটি ফাঁকা টি শার্টের উপর ড্রাগ এন্ড ড্রপ করে লোগো ও কালার ও লেখা দিয়ে খুবই সহজ উপায়ে ডিজাইন করতে হবে। আর এই সহজ ডিজাইন করে আপনি দৈনিক ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
আপনি এই কাজটি সম্পূর্ণ মোবাইল দিয়েই করতে পারবেন। এর জন্য আপনাকে একটি ওয়েবসাইটে যেতে হবে। সেখান থেকে টাকা আয় করতে হবে। টি শার্ট ডিজাইন করে আয় করার পদ্ধতি হল-
১. প্রথমে আপনাকে এই ওয়েবসাইটে ঢুকতে হবে। এরপর start selling অপশনে ক্লিক করতে হবে।
২. এরপর আপনি আপনার টি শার্ট তাদের মার্কেটপ্লেসে বিক্রি করবেন। নাকি নিজে থাকেই স্টোর খুলে বিক্রি করবেন। তা সেট করতে হবে। এরপর আপনাকে রেজিস্ট্রার করতে হবে।
৩. এরপর আপনি তাদের টি শার্ট আপলোড করে খুবই সাধারণ কিছু লোগো ও লেখা দিয়ে ডিজাইন করবেন।
৪. এরপর আপনার টি শার্ট বিক্রি শুরু হয়ে গেলে প্রতিদিন খুব কম করেও হলেও ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
২) ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট বানিয়ে
ওয়ার্ডপ্রেস একটি সি এম এস (CMS)। এর মাধ্যমে কোন প্রকার কোডিং ছাড়াই ও ওয়েব ডেভেলপমেন্ট ছাড়াই ওয়েবসাইট বানানো যায়। আপনি খুব সহজেই ওয়ার্ডপ্রেসে ওয়েবসাইট বানানোর উপায় ইউটিউব দেখে শিখে নিতে পারেন।
ওয়ের্ডপ্রেসে রয়েছে হাজার হাজার ফ্রী থীম। এই থীম দিয়ে আপনি অনেক অনেক ওয়েবসাইট বানান। আপনার একটি পোর্টফোলিও ওয়েবসাইট তৈরি করুন। তারপরে ফাইবারে আপনি ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট বানিয়ে দেওয়ার কাজ করুন।
এখানে কাজের খুবই চাহিদা । আপনি শুরুর দিকেই ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা দিনে আয় শুরু করতে পারবেন। যারা দৈনিক ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা ইনকাম করার উপায় জানতে চান। তাদের জন্য এই উপায়টি সবথেকে পারফেক্ট। তাই সবার আগে ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট বানানো শিখতে হবে।

দৈনিক ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা ইনকাম করার উপায়
৩) ভার্টুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট এর কাজ করে
বিদেশী কোন বিজনেস ম্যানের অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে কাজ করে ইনকাম করাকে ভার্টুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট বলে। যেহেতু আপনি অনলাইনে কাজ করছেন। তাই এই প্রক্রিয়াকে ভার্টুয়াল বলা হচ্ছে। বিভিন্ন মার্কেটপ্লেসে এই কাজের চাহিদা আকাশ ছোঁয়া। আপনি এই কাজ করে প্রতিদিন ৫০০ টাকার উপরে আয় করতে পারবেন। যেসকল মার্কেটপ্লসে ভার্টুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট এর কাজ পাওয়া যায়
- Upwork
- Freelancer
- People per hour
- Guru
- Fiverr ইত্যাদি।
ভার্টুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট এর কি কি কাজ আছে-
১. কপি পেস্ট জব
২. ফেসবুক পোস্টং
৩. সার্ভার ম্যানেজমেন্ট
৪. আর্টিকেল রাইটিং
৫. ইকমার্স আপলোড
৬. ইউটিউব ভিডিও থাম্বনেইল তৈরি
৭. ইউটিউব টাইটেল ও ডেস্ক্রিপশন লেখা ইত্যাদি
ভার্টুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট এর কাজ গুলি অনেক সহজ হয়ে থাকে। আর একজন বায়ার আপনাকে দীর্যদিনের জন্য কাজে নেয়। আপনি এই কাজ করে অনায়েসেই প্রচুর টাকা আয় করতে পারবেন। দিনে ৪০০ থেকে ৫০০ ইনকাম করার ইচ্ছ থাকলে। আপনি আজ থেকেই শুরু করে দিন।
৪) ক্যাপচা এন্ট্রি করে
এই কাজের মত সহজ কাজ আর একটিও নেই। এখানে শুধু আপনাকে কিছু ক্যাপচা দেওয়া হবে। আপনাকে শুধুমাত্র তা দেখে দেখে কপি করে লিখতে হবে। ক্যাপচা মানে হল বিভিন্ন নিরাপত্তা কোড। এই কোডগুলি আপনাকে একের পর এক দেখে দেখে পূরণ করতে হবে। অতি সাধারণ একটি কাজ। আপনার যদি কাজ করারা ধৈর্য্য থাকে। আর আপনি যদি মনে করেন দৈনিক ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা ইনকামের উপায় জানতে হবে। তাহলে আপনি 2captcha ওয়েবসাইটে যান। সেখানে যেয়ে সাইন আপ করে কাজ শুরু করে দিন। আপনি প্রতিদিন টাকা ইনকাম করতে পারবেন। আর সেই টাকা বিকাশে নিতে পারবেন।
৫) ইউটিউব ভিডিও বানিয়ে
ইউটিউবে ভিডিও বানিয়ে আপনি খুব সহজেই ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা আয় করতে পারবেন। তবে এর জন্য আপনার কমপক্ষে ২০ হাজার সাবস্ক্রাইবার থাকতে হবে। আর আপনাকে নিয়মিত ভিডিও দিয়ে যেতে হবে।
আর আপনি অনায়েসেই আয় করতে পারবেন। এর ব্জন্য আপনাকে একটি ইউটিউব চ্যানেল খুলতে হবে। এরপর সেখানে ভিডিও দিয়ে যেতে হবে। আপনি যা পারেন। তারই ভিডিও করে ছেড়ে দিন। আপনার ৪০০০ ঘন্টা ওয়াচ টাইম আর ১ হাজার সাবস্ক্রাইবার হলে আপনি আপনার ভিডিওতে অ্যাড লাগান।
এরপর কয়েকদিন ভিডিও ছাড়তেই থাকুন। দেখবেন যেকোন একটা ভিডিও ভাইরাল হয়ে গেছে। এবার ভিডিও ভাইরাল হলে দেখবেন আপনার অন্যান্য ভিডিওতে ভিউজ আসছে। আর চ্যানেলের সাবস্ক্রাইবার বাড়ছে। এভাবে ২০ হাজার সাবস্ক্রাইবার হলেই আপনি দৈনিক ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা ইনকাম করতে পারবেন। এভাবে লেগে থাকুন। এক সময় আপনার ইনকাম মাসে ৫০ হাজার টাকা হয়ে যাবে।
৬) ডাটা এন্ট্রি করে
আমরা মূলত প্রায় সকলেই মোবাইলে টাইপিং করতে পারি। এছাড়া অনেকেই কম্পিউটারের ওয়ার্ড, এক্সেলের কাজ পারি। এই সামান্য কাজটুকু পারলেই আপনি দৈনিক ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা আয় করতে পারবেন।
ডাটা এন্ট্রির কাজ খুবই সহজ। আর এই কাজগুলি খুব সহজেই মোবাইল দিয়ে করা যায়। আর এই কাজ পাওয়াও অনেক সহজ হয়। আপনি চাইলেই আপওয়ার্ক, ফাইবার, ফ্রিল্যান্সার ইত্যাদি মার্কেটপ্লেসে ডাটা এন্ট্রির কাজ করে সহজেই ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা প্রতিদিন আয় করতে পারবেন। ডাটা এন্ট্রির কি কি কাজ আছে-
- কপি পেস্ট
- ওয়ার্ড টু এক্সেল
- পিডিএফ টু ওয়ার্ড
- ডাটা মাইনিং
- ডাটা কালেক্ট ইত্যাদি।
ডাটা এন্ট্রির কাজ করার জন্য আপনাকে একটি মার্কেটপ্লেসে জয়েন হতে হবে। এরপর আপনি সেখান থেকে ডাটা এন্ট্রির বিভিন্ন কাজ করতে পারবেন। আপনি যদি দৈনিক ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা ইনকাম করতে চান। তাহলে ডাটা এন্ট্রি সম্পর্কে আরো ভাল করে জানুন। এটাতে আপনার ক্যারিয়ার গড়তে পারবেন। কারণ আপনি যখন একজন দক্ষ মানুষে পরিণত হবেন। তখন আপনি মাসে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত আয় করতে পারবেন।
৭) ইকমার্স এক্সপার্ট হয়ে
যে সকল ওয়েবসাইটটে বিভিন্ন পন্য বিক্রি করা হয়। সে ধরনের ওয়েবসাইটকে ইকমার্স ওয়েবসাইট বলে। যেমন- ডারাজ, অ্যামাজন, আজকের ডিল ইত্যাদি। আপনি এই ইকমার্স ওয়েবসাইট শপিফাই, উইক্স ইত্যাদির মাধ্যমে করতে পারবেন। আর শপিফাই ও উইক্স দিয়ে ই কমার্স ওয়েবসাইট বানানো অনেক সহজ। আপনি যদি কোন ওয়েব ডেভেলপারও না হয়ে থাকেন। তবুও আপনি এভাবে ওয়েবসাইট বানাতে পারবেন।
দেখে নিন ইকমার্স ওয়েবসাইট থেকে ইনকামের উপায়ঃ
১. আপনি ওয়েবসাইট বানিয়ে সেই ওয়েবসাইট বিক্রি করে ইনকাম করতে পারেন। ওয়েবসাইট বিক্রির ওয়েবসাইট হল ফ্লিপা
২. আপনি যদি ইকমার্স এক্সপার্ট হয়ে থাকেন। তাহলে ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে ওয়েবসাইট বানিয়ে দিয়ে টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
৩. এছাড়া আপনি নিজেই অনলাইনে ইকমার্সের দোকান দিয়ে পন্য বিক্রি করে টাকা আয় করতে পারবেন।
এভাবে আপনি খুব সহজে দিনে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা আয় করতে পারবেন। এই প্রসেসটা অনেক কঠিন মনে হলেও বাস্তবে এটা অনেক সহজ। আপনি ধীরে ধীরে দিনে ১০০০ থেকে ২০০০ টাকা আয় করা শুরু করে দিতে পারবেন।
৮) ব্লগ বা আর্টিকেল লিখে
আপনি যদি মনে করেন আপনাকে দৈনিক ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা ইনকাম এর উপায় শিখতেই হবে। আর যদি চান তা অনেক সহজ উপায়ে করবেন। তাহলে ব্লগ বা আর্টিকেল লেখা শুরু করে দিন।
এর থেকে সহজ আর কি হতে পারে। আপনি যা জানেন। যা পারেন, তাই লিখুন। এখানে কোন বাধা ধরা নিয়ম নেই। তবে যাই লিখবেন না কেন। নিজস্ব কন্টেন্ট লিখুন। অন্যের চুরি করা কন্টেন্ট থেকে বিরত থাকুন।
ব্লগ লিখে আয় করার জন্য প্রথমে ব্লগার বা ওয়ার্ডপ্রেসে একটি ওয়েবসাইট খুলে ফেলুন। একের পর এক ব্লগ লিখতেই থাকুন। দেখবেন এক সময় অনেক ব্লগ হয়ে গেছে।
এরপর আপনার ওয়েবসাইটে অ্যাড লাগিয়ে, অ্যাফালিয়েট মার্কেটিং করে, স্পন্সরশীপের মাধ্যমে টাকা আয় শুরু করে দিন। দিনে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা অনায়েসেই আয় করতে পারবেন।
শেষকথা
টাকা সবাই আয় করতে চায়। কিন্তু সবাই তা করতে পারেনা। কিছু কিছু ভুলের জন্য মানুষ অনলাইন থেকে টাকা আয় করতে পারেন না। এই ভুলগুলির মধ্যে প্রধান কারণ হল-
- অনলাইনে আয় করা যায় বিশ্বাস না করা।
- খুব কম সময়ে কাজ শিখে ফেলতে চায়
- কোন রকম কাজ শিখে তা তাড়াহুড়া করে টাকা আয়ের চেষ্টা করা
- পরিশ্রম করার প্রবণতা কম থাকা
- ধৈর্য্যের ঘাটতি থাকা
- সঠিকভাবে কাজ না শেখা
দেখুন দিনে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা অনলাইনে থেকে ইনকামের ক্ষেত্রে একেবারেই নিম্ন। আপনি চাইলে দৈনিক ৩ থেকে ৪ আহজার টাকাও ইনকাম করেতে পারেন। তবে এর জন্য উপরের লেখাগুলি খুব ভালভাবে পড়ুন।
অবশ্যই পড়ুনঃ