আপনি সহজেই মোবাইল অ্যাপ টেলিগ্রাম থেকে ইনকাম করতে পারবেন। টেলিগ্রাম হল একটি ম্যাসেজ আদান প্রদান করার অ্যাপ।
এই অ্যাপের সাহায্যে আপনি আপনার পরিবার ও বন্ধুদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।
আমরা সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুক ও ইন্সটাগ্রাম থেকে ইনকাম করার পাশাপাশি টেলিগ্রাম থেকেও ইনকাম করতে পারি।
আপনি যদি ঘরে বসে ইনকাম করতে চান,তাহলে টেলিগ্রামের মাধ্যমে ফ্রি টাকা ইনকাম করতে পারেন।
এছাড়া আপনি টেলিগ্রামের মাধ্যমে ছাত্র অবস্থায় পড়াশোনার পাশাপাশি আয় করতে পারেন।
টেলিগ্রাম হল একটি মোবাইল মেসেজিং অ্যাপ। এই অ্যাপটি দিন দিন অনেক জনপ্রিয় হচ্ছে এর নিরাপত্তার জন্য।
এই অ্যাপে রয়েছে নানা ধরনের ফিচার। টেলিগ্রাম অ্যাপটি আপনি মোবাইল ও কম্পিউটার উভয় দিয়েই ব্যবহার করতে পারবেন।
এই অ্যাপের মাধ্যমে আপনি সহজেই ছবি, ভিডিও, ডকুমেন্ট আদান প্রদান করতে পারবেন।
এছাড়া এই অ্যাপের ইন্টারফেস অনেক সহজ এবং আপনি সহজেই এই অ্যাপ ব্যবহার করতে পারবেন।
আপনি সহজেই টেলিগ্রাম থেকে কয়েকটি সহজ পদ্ধতিতে আয় করতে পারবেন। এছাড়া টেলিগ্রাম থেকে ইনকাম করতে কোন প্রকার ইনভেস্ট করতে হয়না।
আপনি টেলিগ্রাম থেকে ডিপোজিট ছাড়া ইনকাম করতে পারবেন। এই ব্লগটি অত্যন্ত মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
কেননা তাহলে টেলিগ্রাম থেকে আয়ের বিষয়ে খুব সহজেই জানতে পারবেন।
টেলিগ্রাম থেকে ইনকাম করার উপায়
টেলিগ্রাম মেসেজিং অ্যাপের জনপ্রিয়তা দিন দিন অনেক বেড়ে যাচ্ছে। আর যার ফলে এই প্ল্যাটফর্মে ইনকাম করার অনেক বেশি সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে।
আপনি এখন টেলিগ্রাম চ্যানেল ও টেলিগ্রাম গ্রুপের সাহায্যে অনায়েসেই ইনকাম করতে পারছেন।
টেলিগ্রাম থেকে আপনি বেশ কয়েকটি উপায়ে ঘরে বসে ইনকাম করতে পারবেন। এরপর মধ্য থেকে সেরা ৮টি উপায় সম্পর্কে দেখুন।
এই উপায়গুলি অনুসরণ করলে আপনিও সহজেই ইনকাম করতে পারবেন।
তাই এখন অত্যন্ত মনোযোগের সহিত দেখে নিন কি কি উপায়ে টেলিগ্রাম থেকে অর্থ উপার্জন করা যায়।
১. মনিটাইজেশনের মাধ্যমে – টেলিগ্রাম থেকে ইনকাম
আপনি আপনার টেলিগ্রাম অ্যাকাউন্ট থেকে মনিটাইজেশনের মাধ্যমে ইনকাম করতে পারবেন। এইভাবে উপার্জন করার জন্য আপনাকে একটি টেলিগ্রাম চ্যানেল তৈরি করতে হবে।
আপনি খুব সহজেই আপনার টেলিগ্রাম অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে চ্যানেল তৈরি করতে পারবেন।
এরপর সেই চ্যানেলে একটি নাম, প্রোফাইল ছবি, বর্ণনা দিতে হবে। আপনাকে আপনার চ্যানেলের নামের সাথে মিল রেখে কন্টেন্ট আপলোড করতে হবে।
আপনি আপনার চ্যানেলে ভিডিও, ব্লগ , লিংক ইত্যাদি দিতে পারেন। আপনার চ্যানেলের সাবস্ক্রাইবার ১০০০ জন হলে আপনি চ্যানেলে মনিটাইজেশনের মাধ্যমে ইনকাম শুরু করতে পারবেন।
মনিটাইজেশন পেয়ে গেলে আপনার চ্যানেলে বিভিন্ন এড দেখাবে। সেই এড দেখানোর মাধ্যমে আপনার ইনকাম হবে।
আপনার চ্যানেলে যদি সাবস্ক্রাইবার ও এক্টিভ ইউজারের সংখ্যা বাড়তে থাকে, তাহলে আপনার ইনকামও বেড়ে যাবে।
আপনার ইনকামকৃত টাকা Ton আকারে জমা হতে থাকবে। আপনি সেই Ton থেকে সহজেই টাকাতে কনভার্ট করে ব্যাংক একাউন্টের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করতে পারবেন। এই পদ্ধতিতে আপনি অনায়েসেই মাসে ২০ হাজার টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
আপনি আপনার টেলিগ্রাম চ্যানেলের লিংক ইউটিউব, ফেসবুক বা অন্য কোন সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করে চ্যানেলের সাবস্ক্রাইবার বাড়িয়ে নিতে পারবেন।
২. স্পন্সরশিপ এর মাধ্যমে
আপনি নিয়মিত আপনার টেলিগ্রাম চ্যানেলে কাজ করে সাবস্ক্রাইবার বাড়িয়ে নিতে পারবেন।
আপনার চ্যানেলে যখন অনেক সাবস্ক্রাইবার হয়ে যাবে, তখন আপনি অন্য কোন ব্র্যান্ডের প্রমোশন করে টেলিগ্রাম থেকে ইনকাম করতে পারবেন।
এক্ষেত্রে ব্র্যান্ড আপনাকে আপনার টেলিগ্রাম চ্যানেলের ভিউ ও সাবস্ক্রাইবার দেখে তাদের বিভিন্ন প্রডাক্ট বা অ্যাপলিকেশনের প্রমোশন করতে বলবে।
আপনার যদি একটি বড় সাবস্ক্রাইবার যুক্ত একটি টেলিগ্রাম চ্যানেল থাকে, তাহলে আপনি বিভিন্ন ব্রান্ডের পণ্যের প্রচারণা করে একটি ভালো পরিমাণ টাকা আয় করতে পারবেন।
আপনি এইভাবে মাসে ৫০ হাজার টাকা ইনকাম করে নিতে পারবেন। যদিও স্পন্সরশিপ থেকে ইনকাম নির্ভর করে, আপনার চ্যানেলের সাবস্ক্রাইবারের উপর।
৩. কন্টেন্ট লিখে
আপনি যদি লেখালেখিতে অনেক পারদর্শী হয়ে থাকেন, তাহলে আপনি আপনার টেলিগ্রাম চ্যানেলে হাই কোয়ালিটি কন্টেন্ট লিখে ইনকাম করতে পারবেন।
এজন্য আপনাকে একটি নিশ বা ক্যাটাগরি পছন্দ করতে হবে ও সেই নিশ বা ক্যাটাগরির কন্টেন্ট বা আর্টিকেল লিয়মিত লিখে টেলিগ্রাম চ্যানেলে দিয়ে যেতে হবে।
এরপর আপনার টেলিগ্রাম চ্যানেলের আর্টিকেলের লিংক বিভিন্ন সোশ্যাল প্লাটফর্ম থেকে শেয়ার করতে হবে।
এভাবে ধীরে ধীরে আপনার চ্যানেলের কন্টেন্টের নিশ অনুযায়ী সাবস্ক্রাইবার বাড়াতে হবে।
আপনি আপনার টেলিগ্রাম চ্যানেলে কন্টেন্ট লিখে মনিটাইজেশন অ্যাড, স্পন্সরশিপ ও অ্যাফেলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে টেলিগ্রাম থেকে ইনকাম করতে পারবেন।
৪. অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে
আপনি আপনার অ্যামাজন অ্যাফিলিয়েট পণ্য আপনার টেলিগ্রাম চ্যানেল এর মাধ্যমে বিক্রি ইনকাম করতে পারবেন।
এর জন্য আপনার অ্যামাজন অ্যাফিলিয়েট একাউন্ট থাকতে হবে। আপনি খুব সহজেই অ্যামাজন অ্যাফিলিয়েট একাউন্ট তৈরি করতে পারবেন।
এরপর অ্যামাজনে যেসকল পণ্যের দামে সেল চলছে বা অফার দিচ্ছে (যেমন- ৫০০ টাকার পণ্য ৩০০ টাকা), সেই সকল পণ্যের অ্যামাজন অ্যাফিলিয়েট লিংক আপনার টেলিগ্রাম চ্যানেলে শেয়ার করতে হবে।
সেই লিংকের মাধ্যমে কেউ পণ্যটি ক্রয় করলে আপনি কমিশনের মাধ্যমে একটি ভালো পরিমাণ টাকা টেলিগ্রাম থেকে আয় করতে পারবেন।
এজন্য আপনার চ্যানেলকে জনপ্রিয় করে তুলতে হবে।
৫. আর্নিং অ্যাপ রেফার করে
বিভিন্ন মোবাইলে আর্নিং অ্যাপে রেফারেল প্রোগ্রাম চালু আছে। সাধারণত গেম খেলে, ভিডিও দেখে বা সার্ভে করে আয় করার যায়, এই রকম নানা অ্যাপে রেফারেল প্রোগ্রামের ব্যবস্থা আছে।
এই সকল অ্যাপের লিংক আপনি আপনার টেলিগ্রাম চ্যানেলে শেয়ার করে অন্যকে সেই অ্যাপ ডাউনলোড করিয়ে বা অ্যাকাউন্ট করিয়ে ইনকাম করতে পারেন।
এই ধরনের অ্যাপ কর্তৃপক্ষ প্রতি রেফারেলের জন্য অর্থ প্রদান করে থাকে। আপনি যদি আপনার টেলিগ্রাম চ্যানেলে সাবস্ক্রাইবার বাড়াতে পারেন।
তাহলে এই ধরনের অ্যাপের রেফারেল প্রোগ্রাম থেকে দিনে ৫০০ টাকা ইনকাম করতে পারবেন। রেফার করে ইনকাম করার যায়, এমনি কয়েকটি অ্যাপ হল-
- Ysense
- Taskbucks
- Meesho
রিলেটেডঃ ৯টি রেফার করে টাকা ইনকাম করার অ্যাপস
৬. ফ্রিল্যান্সিং গ্রুপে যুক্ত হয়ে – টেলিগ্রাম থেকে ইনকাম
আপনি যদি গ্রাফিক ডিজাইন, কন্টেন্ট রাইটার, ওয়েব ডিজাইন ইত্যাদি ফ্রিল্যান্সিং কাজে খুব ভালো হয়ে থাকেন, তাহলে টেলিগ্রাম অ্যাপের মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ পেতে পারেন।
এ জন্য আপনাকে টেলিগ্রাম অ্যাপের বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং গ্রুপে যুক্ত হতে হবে। আপনার টেলিগ্রাম অ্যাকাউন্টে আপনার ফ্রিল্যান্সিং কাজ ও অভিজ্ঞতা সম্পর্কে লিখতে হবে।
এই ধরনের গ্রুপে আপনি আপনার দক্ষতা অনুযায়ী ভালো মানের বায়ার খুঁজে নিতে পারেন।
এই সমস্ত বায়ারের কাজ করে আপনি আপনার ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ারকে সম্মৃদ্ধ করতে পারবেন।
৭. ইউটিউব ভিডিও কন্টেন্ট ও ওয়েবসাইট ব্লগ পোস্ট শেয়ার করে
আপনার যদি একটি ইউটিউব চ্যানেল থাকে বা একটি ব্লগ ওয়েবসাইট থাকে, তাহলে আপনি আপনার চ্যানেলের ভিডিও বা ওয়েবসাইটের ব্লগের প্রচারণার মাধ্যম হিসেবে টেলিগ্রাম চ্যানেল ব্যবহার করতে পারেন।
এ জন্য আপনাকে আপনার ইউটিউব ভিডিও ও ব্লগপোস্টের লিংক নিয়মিত টেলিগ্রাম চ্যানেল থেকে শেয়ার করতে হবে।
এরপর আপনার চ্যানেলের সাবস্ক্রাইবকৃত ব্যক্তিরা সেই লিংকে ক্লিক করে আপনার ভিডিও বা ব্লগ দেখলে আপনার ইউটিউব ভিডিও ও ওয়েবসাইটের ব্লগপোস্টে ভিউ বেড়ে যাবে।
এতে করে আপনার ইনকাম বেড়ে যাবে। এভাবে আপনি সহজেই টেলিগ্রাম থেকে ইনকাম করতে পারবেন।
৮. চ্যানেল বিক্রি করে
আপনার যদি একটি বড় সাবস্ক্রাইবার সম্মৃদ্ধ টেলিগ্রাম চ্যানেল থাকে, তাহলে আপনি আপনার সেই চ্যানলকে অন্যের কাছ বিক্রি করে ইনকাম করতে পারেন।
এজন্য আপনাকে একটি চ্যানেল খুলে কয়েক মাসে সেই চ্যানেলের উন্নতির জন্য কাজ করে যেতে হবে ও এর অ্যাক্টিভ সাবস্ক্রাইবার বাড়াতে হবে।
অনেকেই আছেন, যারা এই ধরনের চ্যানেলের প্রতি আগ্রহী। আপনি আপনার চ্যানেলকে তাদের কাছে বিক্রি করে ১০০ ডলার থেলে ৫০০০ হাজার ডলার পর্যন্ত ইনকাম করে নিতে পারবেন।
FAQ: টেলিগ্রাম থেকে ইনকাম
টেলিগ্রাম থেকে কি কি উপায়ে ইনকাম করা যায়?
আপনি নানা উপায়ে টেলিগ্রাম থেকে আয় করতে পারবেন। যেমন- মনিটাইজেশন, স্পন্সরশিপ, অ্যাফেলিয়েট মার্কেটিং, চ্যানেল বিক্রি করে, রেফার করে ইত্যাদি।
টেলিগ্রাম চ্যানেল মনিটাইজ করতে কত সাবস্ক্রাইবার প্রয়োজন?
আপনার চ্যানেলে ১০০০ সাবস্ক্রাইবার হলে আপনি চ্যানেল মনিটাইজ করতে পারবেন।
আমি কি একসাথে একাধিক টেলিগ্রাম চ্যানেল খুলতে পারব?
হ্যাঁ আপনি একসাথে একাধিক চ্যানেল খুলতে পারবেন।
টেলিগ্রাম চ্যানেল থেকে আয় হতে কতদিন সময় লাগবে?
এটা নির্ভর করে আপনার চ্যানেলের অ্যাক্টিভ সাবস্ক্রাইবার এর উপর। আপনি যত পরিশ্রম দিয়ে টেলিগ্রামে কাজ করে সাবস্ক্রাইবার বাড়িয়ে নিতে পারবেন, তত তাড়াতাড়ি আপনার চ্যানেলে থেকে ইনকাম শুরু করতে পারবেন।
শেষ কথা – টেলিগ্রাম থেকে ইনকাম
আজকাল টেলিগ্রাম একটি ভালো ইনকামের মাধ্যম হয়ে উঠছে। আপনিও এই সোশ্যাল অ্যাপের মাধ্যমে উপরের দেখানো নিয়ম অনুসারে ইনকাম করার চেষ্টা করে দেখতে পারেন।
এই প্ল্যাটফর্ম থেকে ইনকাম করার জন্য আপনাকে প্রথম দিকে একটু ধৈর্য্য নিয়ে কাজ করে যেতে হবে।
ধীরে ধীরে এই প্ল্যাটফর্ম থেকে আপনি অনেকে ভালো পরিমাণ টাকা ইনকাম শুরু করতে পারবেন।