আপনি যদি আপনার ব্লগে ভালো ভিজিটর চান, তাহলে আপনার ব্লগ বা আর্টিকেলের বর্ণনা লেখার নিয়ম জানতে হবে।

এই বর্ণনার উপরেই একটি ব্লগ বা আর্টিকেলের র‍্যাংক বা পজিশন নির্ভর করে।

প্রতিটি আর্টিকেলে তিনটি সেকশন থাকে। সেগুলি হল ভূমিকা, বর্ণনা ও উপসংহার।

আপনি যদি একটি ভালো আর্টিকেল লিখতে চান, তাহলে আপনাকে অবশ্যই অনেক রিসার্চ করে আর্টিকেলের বর্ণনা লিখতে হবে।

একটি আর্টিকেলে আপনি যে প্রধান বিষয়টি লিখতে চান, তা বিশদভাবে বর্ণনাতে আপনাকে তুলে ধরতে হবে।

আপনাকে সবসময় মাথায় রাখতে হবে, এই অংশটি প্রতিটি ভিজিটর খুব ভালোভাবে পড়ে।

একজন ভিজিটর বা পাঠক একটি আর্টিকেলের ভূমিকা ও উপসংহার না পড়লেও, বর্ণনা কিন্তু কখনোই পড়িতে মিস করে না।

কেননা একটি আর্টিকেলের মূল বিষয়বস্তু বর্ণনাতেই থাকে। আপনি যদি একটি আর্টিকেলকে অনেক বড় করে লিখতে চান, তাহলে সব সময় আপনার বর্ণনাটিকেই বড় বা বিশদ করতে হবে।

একটি আর্টিকেলে কিভাবে বর্ণনা লিখতে হয় তা এই ব্লগ পড়ে বিস্তারিত জানতে পারবেন।

এই পোস্টে যা যা থাকছে-

আর্টিকেল বা ব্লগের বর্ণনা কি?

বর্ণনা হল একটি ব্লগ বা আর্টিকেলের মূল বিষয়বস্তু। যেখানে একটি আর্টিকেলের মূল বিষয়বস্তুকে বিস্তারিত ভাবে লেখা হয়।

বর্ণনা পড়ে একজন পাঠক সম্পূর্ণ ব্লগটির সকল তথ্য জানতে পারেন।

একটি আর্টিকেলের বর্ণনা লেখার নির্দিষ্ট কোনো শব্দ লিমিট নেই। এই অংশটি আপনি অনেক বিশদ করে লিখতে পারেন।

বর্ণনাতে একটি আর্টিকেলের উপর রেখা তৈরি করতে হয়।

আপনি যে টপিকের উপর আর্টিকেলটি লিখতে চাচ্ছেন, সেই আর্টিকেলের বিস্তারিত তথ্য বর্ণনাতে সন্নিবেশিত করতে হয়।

এছাড়া একটি বর্ণনাতে সাব হেডিং, বুলেট পয়েন্ট, নাম্বারিং করে লেখা থাকতে হবে।

আর অবশ্যই সম্পূর্ণ আর্টিকেলের ফোকাস কিওয়ার্ড, রিলেটেড কিওয়ার্ড, লং টেইল কিওয়ার্ড গুলি বর্ণনার সঠিক জায়গায় থাকতে হবে।

ব্লগ বা আর্টিকেলে ভালোভাবে বর্ণনা লেখার উপকারিতাঃ

আপনি যদি একটি ব্লগ বা আর্টিকেলে ভালোভাবে বর্ণনা লিখতে পারেন। তাহলে এর নানা ধরনের উপকারিতা রয়েছে।

সেগুলি হলঃ

১. আপনার ব্লগের বর্ণনা যদি খুব ভালো হয়, আর একজন পাঠক যদি সেটি খুব মনোযোগ দিয়ে পড়ে, তাহলে আপনার ইনকাম বৃদ্ধি পাবে।

২. বর্ণনাতে থাকা প্রতিটি বিষয় বস্তু যদি একজন পাঠক ফলো করে, তাহলে আপনার লেখার সার্থকতা হবে।

৩. একটি ভালো বর্ণনা সম্পূর্ণ পোস্টকে গুগল সার্চের উপরের দিকে দেখাবে। এতে করে আপনার সেই পোস্টের ভিজিটর বৃদ্ধি পাবে

৪. আপনি যদি খুব সুন্দর করে একটি বর্ণনা লিখতে পারেন, তাহলে আপনার লেখার উপর টার্গেটেড ভিজিটর পাবেন।

ব্লগ বা আর্টিকেলের বর্ণনা লেখার নিয়মঃ

সুন্দর ও সঠিকভাবে একটি ব্লগের বর্ণনা লিখলে, সে ব্লগটি যথার্থতা পায়।

বর্ণনা হলো একটি আর্টিকেলের প্রাণ। তাই এই অংশটি খুবই ভালো করে লিখতে হবে। এখন দেখে নেই, একটি সমূর্ণ ব্লগ বা আর্টিকেলের বর্ণনা লেখার নিয়ম-

১. বর্ণনাতে সাব হেডিং এর ব্যবহার

একটি আর্টিকেলের বর্ণনাতে কমপক্ষে ছয়টি সাব হেডিং থাকতে হবে।

এই সাব হেডিং গুলি দেখে একজন পাঠক বা ভিজিটার খুব সহজেই আপনার ব্লগ বা আর্টিকেলটি সম্পর্কে বুঝতে পারবে।

কেননা সাব হেডিং গুলি সহজেই চোখে পড়ে। একটি আর্টিকেলের সাব হেডিং গুলি হল h2, h3, h4 ইত্যাদি ট্যাগ।

এই সাব হেডিং এর প্যারাতে ৩০০ এর বেশি শব্দ লেখা যাবে না। অর্থাৎ একটি সাব হেডিং এর প্যারাতে ৩০০ শব্দ থাকতে হবে।

এর বেশি প্যারা থাকা ঠিক না। কেননা এতে পাঠক সেই ব্লগ বা আর্টিকেল পড়তে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবে না।

২. নাম্বারিং করে বা বুলেট আকারে লেখা থাকা

একটি আর্টিকেলের বর্ণনাতে অবশ্যই বুলেট আকারে বা নাম্বারিং করে লেখা থাকতে হবে।

এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। বর্ণনার কোন জায়গায় বুলেট আকারে বা নাম্বারিং করে লেখা হলে, পাঠক বা ভিজিটর সেটি খুব ভালোভাবে বুঝতে পারে।

বুলেট পয়েন্ট এর উদাহরণ হল-

ভিটামিন এ যুক্ত ফলগুলি হল-

  • আম
  • পাকা পেঁপে
  • কাঁঠাল

নাম্বারিং করে লেখার উদাহরণ-

ভিটামিন সি যুক্ত ফলগুলি হল-

১. আমলকি

২. বেলু

৩. পেয়ারা

৩. প্রশ্ন করা ও সেই প্রশ্নের উত্তর থাকা এমনভাবে বিষয়বস্তু বর্ণনাতে থাকা

একটি আর্টিকেলের বর্ণনা এমন বিষয়বস্তু থাকতে হবে, যে বিষয়বস্তুগুলোতে সাধারণত মানুষ প্রশ্ন করে থাকে।

সেই প্রশ্নগুলি আপনাকে খুঁজে বের করতে হবে। আর সেগুলি বিশদভাবে আপনাকে লিখতে হবে।

যেমন আপনি যে বিষয়ের উপর আর্টিকেল লিখছেন, সেই বিষয়ে মানুষ আসলে কি প্রশ্ন করে বা কি সার্চ করে, তা আপনাকে খুঁজে বের করতে হবে।

এটি আপনি গুগলের সার্চ থেকে খুঁজে বের করতে পারেন।

আপনি যখন জেনে যাবেন সেই বিষয় নিয়ে মানুষ কি লিখে সার্চ করছে, তখন আপনাকে সেই প্রশ্নের উত্তরগুলি বর্ণনাতে বিশদভাবে লিখতে হবে।

৪. বর্ণনাতে অবশ্যই শক্তিশালী শব্দ থাকা

যে শব্দগুলো লিখে মানুষ বেশি বেশি সার্চ করে এমন শব্দ আর্টিকেলের বর্ণনাতে থাকতে হবে।

এ জন্য আপনাকে সঠিকভাবে ফোকাস কিওয়ার্ড, লং টেইল কিওয়ার্ড ও রিলেটেড গুলি বের করে বর্ণনাতে লিখতে হবে।

৫. ক্লিকবেইট টাইপের শব্দ বর্ণনার সাব হেডিং বা কোথাও থাকা না লেখা

ক্লিকবেইট বলতে বোঝায়, যে শব্দগুলো মানুষ দেখামাত্র ক্লিক করে।

যেমন- একদিনে ত্বক ফর্সা করুন। একদিনেই চুল গজান। এই টাইপের অবাস্তব কথাগুলো বর্ণনাতে থাকা যাবে না।

কেননা অবাস্তব শব্দ গুগল পছন্দ করে না। আর এতে ভিজিটরের অভিজ্ঞতাও অনেক খারাপ হয়।

তাই এই ধরনের চাটুকারি শব্দ ব্যবহার না করাই ভালো।

৬. বর্ণনাতে কোন প্রকার কপি কন্টেন্ট না লেখা

অন্য কোন ওয়েবসাইট থেকে সরাসরি কোন লেখা কপি করে বর্ণনাতে লেখা যাবে না।

এছাড়া কোন এআই সফটওয়্যারের মাধ্যমে কোন লেখা বর্ণনাতে হুবহু লেখা যাবে না।

এটা আপনার আর্টিকেলের সার্চ রেজাল্টের উপর বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করবে। 

যার ফলে কোন ভাবে আপনার লেখাটি গুগলে দেখাবে না বা র‍্যাংক করবে না।

৭. বর্ণনাতে আপনার ব্লগ বা আর্টিকেলের বিষয়বস্তুকে বিশদভাবে লেখা

আর্টিকেলের বর্ণনাতে একটি আর্টিকেলের মূল বিষয়বস্তু বিশদভাবে লিখতে হবে।

চেষ্টা করতে হবে, কোন বিষয় যেন বাদ না যায়। 

এতে করে, যখন কোন ভিজিটর আপনার ওই পোস্টে আছে এমন যেকোনো বিষয়ে সার্চ করবে, তখন সে খুব সহজেই গুগলে আপনার পোস্ট বা আর্টিকেলটি খুঁজে পাবে।

আর যদি আপনার পোস্টটিতে বেশি বেশি ভিজিটর হয়, তাহলে এটি গুগল সার্চ এর উপরের দিকে দেখাবে বা প্রথম সারিতে দেখাবে।

তাই অবশ্যই বর্ণনার লেখাগুলি বিস্তারিতভাবে লিখতে হবে।

৮. ১৫০০ শব্দের একটি আর্টিকেলে বর্ণনা কমপক্ষে ১১০০ শব্দ থেকে ১২০০ শব্দের মধ্যে থাকা

আপনার আর্টিকেলটি যদি ১৫০০ শব্দের হয়, তাহলে এর বর্ণনাতে ১১০০ শব্দ থেকে ১২০০ শব্দে থাকলে ভালো।

এছাড়া আর্টিকেলটি যদি আরো অনেক বড় হয় বা ১৫০০ শব্দের বেশি হয়, সেক্ষেত্রে বর্ণনাতে আরও বেশি শব্দ যুদ্ধ করতে হবে। 

উপসংহার – আর্টিকেলের বর্ণনা লেখার নিয়ম

এই ব্লগটি পড়ে আমরা একটি ব্লগ বা আর্টিকেলে কিভাবে বর্ণনা লিখতে হয়, তা জানতে পারলাম।

আরও জানতে পারলাম একটি আর্টিকেলের বর্ণনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।

সঠিকভাবে বর্ণনা লেখা না হলে, আর্টিকেলটি পূর্ণতা পাবে না। তাই আমাদের উপরের নিয়মগুলি অনুসরণ করে সঠিকভাবে একটি আর্টিকেলের বর্ণনা লিখতে হবে।

আর বর্ণনাতে সকল তথ্য সম্পূর্ণ সঠিক হতে হবে। ভুল ও মনগড়া তথ্য বর্ণনাতে লেখা যাবে না।

সব সময় পাঠক ও রাইটারের মধ্যে একটি সুসম্পর্ক তৈরি হতে হবে।

এই পোস্টটি শেয়ার করুন