আপনি যদি বাংলা আর্টিকেল লেখার নিয়ম জানতে চান, তাহলে এই ব্লগটি আপনার জন্য।

প্রতিদিন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে হাজার হাজার আর্টিকেল যুক্ত হচ্ছে। মানুষ বিভিন্ন কিছু জানতে সার্চ ইঞ্জিনে সার্চ করে। তখন তারা অনেকে অনেক আর্টিকেল বিভিন্ন ওয়েবসাইটে দেখতে পায়।

এই সকল আর্টিকেল পড়ে মানুষ তাদের প্রয়োজনীয় তথ্য পেতে পারে। আমরা বিভিন্ন আর্টিকেল লিখে আমাদের ওয়েবসাইটে যুক্ত করতে পারি।

আর আর্টিকেল লিখে মাসে লাখ টাকা ইনকাম করতে পারি। এখন প্রশ্ন হল- বাংলাতে আর্টিকেল লিখেও কি মাসে লাখ টাকা ইনকাম সম্ভব? উত্তরটি হল হ্যাঁ বাংলা আর্টিকেল লিখেও মাসে লাখ টাকা ইনকাম করা সম্ভব।

বাংলা আর্টিকেল লেখার নিয়ম

তবে এর জন্য আমাদের বাংলা আর্টিকেল লেখার নিয়ম অনুসারে আর্টিকেল লিখতে হবে। আর সেই আর্টিকেল হতে হবে এসইও ফ্রেন্ডলি।

এই পোস্টে যা যা থাকছে-

আর্টিকেল কি?

আর্টিকেল হল একটি নির্দিষ্ট টপিকের উপর অনেকগুলি লেখার সমষ্টি।

যা পড়ে একজন পাঠক তার প্রয়োজনীয় তথ্য পেতে পারে ও উপকৃত হতে পারে।

বিভিন্ন কারণে আর্টিকেল লেখা হয়। যেমন কোন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের প্রচার ও প্রসারে আর্টিকেল লেখা হতে পারে। অ্যাফেলিয়েট মার্কেটিং এর জন্য বিভিন্ন পণ্যের উপর বিবরণ দিয়ে আর্টিকেল লেখা হতে পারে।

এছাড়া মানুষের উপকারী তথ্য দিয়ে আর্টিকেল লেখা হতে পারে। সাধারণত এই ধরনের আর্টিকেলে মানুষ বিজ্ঞাপণ দেখিয়ে ইনকাম করার জন্য লিখে থাকে।

বাংলা আর্টিকেল লেখার নিয়ম

আপনি যদি বাংলা আর্টিকেল লিখে মাসে লাখ টাকা ইনকাম করতে চান, তাহলে আপনাকে অবশ্যই আর্টিকেল লেখার প্রকৃত কৌশল জানতে হবে।

অনেকে অনেক বড় আর্টিকেল লিখেও সেগুলি গুগল সার্চে র‍্যাংক করাতে পারেনা।

কারণ তারা সঠিক উপায়ে আর্টিকেল লিখেনা। আজ আমরা জানব কিভাবে সঠিক নিয়মে আর্টিকেল লিখতে হয়। বাংলা আর্টিকেল লেখার নিয়ম গুলি হল-

১. টপিক নির্বাচন করা

২. প্রকৃত পাঠক সম্বন্ধে ধারণা

৩. টপিক সম্পর্কে ভালোভাবে রিসার্চ করা

৪. আর্টিকেলের একটি রূপরেখা তৈরি করা

৫. একটি ড্রাফট আর্টিকেল লেখা

৬. এসইও ফ্রেন্ডলি করে আর্টিকেল লেখা

৭. সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি রিভিশন দেওয়া

এবার বিস্তারিত দেখুন-

১) টপিক নির্বাচন করা – বাংলা আর্টিকেল লেখার নিয়ম

আর্টিকেল লেখার ক্ষেত্রে আপনাকে সর্বপ্রথম একটি টপিক নির্বাচন করতে হবে।

আপনাকে এমন বিষয়ের উপর টপিক নির্বাচন করতে, যে বিষয়ে একজন পাঠকের আগ্রহ আছে। এর জন্য আপনাকে বিভিন্ন টুলসের সাহায্য নিতে হবে।

এই সকল টুলসের মাধ্যমে আপনাকে এনালাইসিস করতে হবে, যেসকল টপিকের উপর মানুষের আগ্রহ বেশি, কিন্তু গুগলে কম্পিটিশন কম, এমন বিষয়ে। আপনি যেসকল টুলসের ব্যবহার করতে পারেনঃ

২) প্রকৃত পাঠক সম্বন্ধে ধারণা – বাংলা আর্টিকেল লেখার নিয়ম

আপনার টপিক ও ওয়েবসাইটের পাঠকের মতিগতি আপনাকে বুঝতে হবে। আপনার পাঠক কোন কোন দেশ থেকে বেশি, তারা কি ধরনের কন্টেন্ট পছন্দ করেন।

কোন কোন বয়সের পাঠকের সংখ্যা বেশি, আপনার পাঠক ছেলে না মেয়ে বেশি হয়।

এই সকল কিছু সম্বন্ধে আপনাকে ধারণা নিতে হবে। এছাড়া আপনাকে পাঠক বা ভিজিটর কোন কোন মাধ্যম থেকে বেশি আসছে।

আর এই সকল কিছু আপনি যেসকল টুলসের মাধ্যমে জানতে পারবেন-

৩) টপিক সম্পর্কে ভালোভাবে রিসার্চ করা

যেকোন টপিকে আর্টিকেল লেখার আগে, সেই বিষয়ে আগে খুব ভালোভাবে রিসার্চ করে নিতে হবে।

সেই টপিক সম্পর্কে গুগলে ভালোভাবে সার্চ করে মূল বিষয়বস্তু পড়ে নিতে হবে।

প্রয়োজনে নোট করে রাখতে হবে। একটি কথা মাথায় রাখতে হবে, যেকোন বিষয়ে গুগল থেকে দেখে তা হুবাহু বাংলাতে ট্রান্সলেট করে লেখা যাবেনা।

যেকোন বিষবস্ত সম্পর্কে ভালোভাবে পড়াশুনা করে, সেই বিষয়ে নিজের মত করে লিখতে হবে। তাই বাংলা আর্টিকেল লেখার নিয়ম জানার আগের, টপিক রিসার্চ করার উপায় জানা জরুরী।

৪) আর্টিকেলের একটি রুপরেখা তৈরি করা – বাংলা আর্টিকেল লেখার নিয়ম

একটি আর্টিকেলে আপনি কি কি লিখতে চাচ্ছেন, তার একটি রূপরেখা আপনাকে তৈরি করতে হবে।

যেমন- একটি আর্টিকেলে আপনি কি কি পয়েন্ট লিখতে চাচ্ছেন, তা ঠিক করুন।

যেমন- ভূমিকা, কিভাবে, কেন, কতপ্রকার, বডি প্যারাগ্রাফ, মেইন বিষয়বস্ত, উপসংহার।

এভাবে আপনি যা যা লিখতে চান, আর যত গুলি পয়েন্ট লিখতে চান, তা আগে থেকে ই লিখুন।

৫) একটি ড্রাফট আর্টিকেল লেখা – বাংলা আর্টিকেল লেখার নিয়ম

এই পর্যায়ে আপনাকে একটি খচরা আর্টিকেল লিখতে হবে। আপনি যে যে পয়েন্টগুলি পূর্বে লিখেছিনে, তার বিষদ বর্ণনা আকারে লিখতে হবে।

এতে অনেক বানানভুল ও লেখাতে অনেক ভুল থাকতে পারে। সেদিকে নজর না দিয়ে লিখে যেতে হবে।

আর্টিকেলটিতে পর্যাপ্ত তথ্য দিয়ে লেখাটি শেষ করতে হবে।

৬) এসইও ফ্রেন্ডলি করে আর্টিকেলটি লেখা

বাংলা আর্টিকেল লেখার নিয়ম এ আর্টিকেলটি এসইও ফ্রেন্ডলি করে লেখা খুবই জরুরী। আপনার আর্টিকেলটি এসইও ফ্রেন্ডলি করে লেখার জন্য যে সকল বিষয় মেনে চলতে হবেঃ

1. কার্যকরী টাইটেল সেট করা

আর্টিকেল লেখার ক্ষেত্রে সর্বপ্রথম আপনাকে একটি কার্যকরি টাইটেল দিতে হবে। যে টাইটেল পড়ে মানুষ বুঝতে পারবে যে, কোন বিষয়ের উপর আর্টিকেলটি লেখা হচ্ছে।

এই টাইটেলটি খুব বেশি বড় করা যাবেনা। ৫ থেকে ৯ শব্দের মধ্যে টাইটেলটি লিখতে হবে। কিভাবে টাইটেল লিখতে হয় তা জানতে এই ব্লগটি পড়ুন

2. ফোকাস কিওয়ার্ড নির্বাচন করা

একটি আর্টিকেল লেখার পূর্বে এর একটি ফোকাস কিওয়ার্ড নির্বাচন করতে হবে।

এই ফোকাস কিওয়ার্ডটি আপনার আর্টিকেলের মধ্যে বিভিন্ন জায়গাতে লিখতে হবে।

ধরুন আপনি ১০০০ শব্দের একটি আর্টিকেল লিখেছেন, তাহলে আপনাকে ফোকাস কিওয়ার্ড আর্টিকেলে ১০ থেকে ১২ বার লিখতে হবে।

আবার আপনি যদি ৫০০-৬০০ শব্দের আর্টিকেল লিখেন, তাহলে আপনাকে ফোকাস কিওয়ার্ড ৬-৭ বার লিখতে হবে।

এভাবে আপনি যত বড় আর্টিকেলে লিখেবেন আপনাকে তত বেশি ফোকাস কিওয়ার্ড আর্টিকেলে লিখতে হবে।

কিভাবে ফোকাস কিওয়ার্ড নির্বাচন করতে হবে, তা জানতে এই ব্লগটি পড়ুন

3. ভূমিকা লেখা

আর্টিকেল লেখার শুরুতে একটি ভূমিক লেখা। ভুমিকায় একটি সম্পূর্ণ আর্টিকেলে কি লেখা হবে তার সারসংক্ষেপ লিখতে হবে। এই সারসংক্ষেপ পড়েই যেন একজন পাঠক আর্টিকেলটির মূল বিষয়বস্তু বুঝতে পারে। এই ভূমিকাতেও ফোকাস কিওয়ার্ড যুক্ত করতে হবে। আর্টিকেলে কিভাবে ভূমিকা লিখতে হয়,তা জানতে এই ব্লগটি পড়ুন

4. হেডার ট্যাগের ব্যবহার

একটি আর্টিকেল লিখতে আমাদের অনেকগুলি প্যারা ব্যবহার উচিত।

এই প্যারাগুলি লেখার সময় আমাদের সাধারণ একটি হেডিং দিতে হয়। এই হেডিং গুলি হল h2 বা h3 ট্যাগ। আমাদের আর্টিকেলের মেইন টাইটেলটি হল h1 ট্যাগ।

এরপর আর্টিকেলের ভেতরে যে হেডিংগুলি লেখা হয় সেগুলি হল h2, h3, h4 ট্যাগ। একটি প্যারাতে h2 ট্যাগের উপরে কখনোই h3 ট্যাগ লেখা যাবেনা।

অর্থাৎ এটি সিরিয়ালি লিখতে হবে। প্রথমে h2। এরপর h3. এরপর h4 এভাবে। একটি আর্টিকেলের যদি ৬টি h2 বা h3 ট্যাগ থাকে। তাহলে কমপক্ষে ৩টিতে ফোকাস কিওয়ার্ড থাকতে হবে।

5. প্যারা লেখার নিয়ম

একটি আর্টিকেলের প্যারা কমপক্ষে ৫ লাইনের লিখতে হবে। আর একটি হেডিং এর আন্ডারে প্যারাতে ৩০০ শব্দের বেশি লেখা যাবেনা।

6. আর্টিকেলে ছবির ব্যবহার

একটি আর্টিকেলে অবশ্যই ১টি বা ২টি বা ৩টি ছবি ব্যবহার করতে হবে। এই ছবিগুলি আর্টিকেলের যেকোন প্যারাতে সেট করতে হবে।

এই ছবিগুলি অবশ্যই কপি রাইট ফ্রি হতে হবে। অর্থাৎ অন্যের ছবি ব্যবহার করা যাবেনা।

এর জন্য যেকোন ছবি গুগলে সার্চ দিয়ে ডাউনলোড করে সেট করা যাবেনা।

এক্ষেত্রে আপনার ওয়েবসাইটটি গুগল থেকে পেনাল্টি খেতে হতে পারে। আপনি unsplash, pixabay ইত্যাদি ছবির সাইটে যেয়ে কপি রাইট ফ্রি ছবি ডাউনলোড করে আপনার আর্টিকেলে ব্যবহার করতে পারেন।

এক্ষেত্রে আপনার আর কোন সমস্যা হবেনা। এছাড়া আরো ভালো হয়, আপনি যদি এই ছবিগুলি এই সমস্ত ওয়েবসাইট থেকে ডাউনলোড করে নিজের মত এডিট করে আর্টিকেলে ব্যবহার করেন।

আর্টিকেলে ছবি ব্যবহারের বিস্তারিত জানুন

7. বুলেট আকারে লেখা

একটি আর্টিকেলের কোন প্যারাতে কোন কিছুর বৈশিষ্ট্যমুলক কিছু লেখা। বা কোন লেখা যা সিরিয়ালি লিখতে হয়। সেগুলি একের পর এক না লিখে বুলেট আকারে লিখতে হবে।

যেমনঃ

কোন কিছুর বৈশিষ্ট্যঃ

  • উদাহরণ ১
  • উদাহরণ ২
  • উদাহরণ ৩

8. শেষকথা বা উপসংহার সেট করা

আপানাকে প্রতিটি আর্টিকেলে একটি শেষকথা বা উপসংহার লিখতে হবে।

এই উপসংহারে আপনার আর্টিকেলের মূল বিষয়বস্তু আবার সংক্ষেপে তুলে ধরতে হবে।

আপনার আর্টিকেলের যে এখানেই সমাপ্তি, তা পাঠককে জানাতে হবে।

এই উপসংহার প্যারাতেও আপনার আর্টিকেলের ফোকাস কিওয়ার্ড থাকলে ভালো হবে।

সঠিকভাবে উপসংহার বা শেষ প্যারা লেখার নিয়ম জানতে এখানে ক্লিক করুন

9 . কিওয়ার্ড রিসার্চ করে ব্লগ লেখা

আর্টিকেল লেখার জন্যের মধ্যে সঠিক কিওয়ার্ড দিতে হবে। এর জন্য কিওয়ার্ড রিসার্চ করে অনেকগুলি কিওয়ার্ড বাছাই করে,সেই কিওয়ার্ড গুলি দিয়ে আর্টিকেলটি লিখতে হবে।

নানাভাবে কিওয়ার্ড রিসার্চ করা যায়। কিভাবে সঠিকভাবে কিওয়ার্ড রিসার্চ করতে হয়,জানতে এই ব্লগটি পড়ুন

10 . কিওয়ার্ড ডেনসিটি ও কিওয়ার্ড ডিস্ট্রিবিউশন এর সঠিক ব্যবহার

একটি আর্টিকেলে লিখতে কিওয়ার্ড রিসার্চ করে কেবল কিওয়ার্ড লিখলেই চলবেনা।

এই সকল কিওয়ার্ডের সঠিক ডেনসিটি ও কিওয়ার্ড ডিস্ট্রিবিউশন মেনে কিওয়ার্ড ব্যবহার করতে হবে।

এই সম্পর্কে আরো জানতে এই ব্লগটি পড়ুন

৭) সম্পূর্ণ আর্টিকেল রিভিশন দেওয়া – বাংলা আর্টিকেল লেখার নিয়ম

সমস্ত আর্টিকেলটি উপরের নিয়মে এসইও ফ্রেন্ডলি করে লেখার পর দেখতে হবে, আর্টিকেলে কোথাও কোন ভুল তথ্য হয়েছে কিনা।

যদি তথ্যে ভুল থাকে, তাহলে সংশোধন করে নিতে হবে।

এছাড়া যদি কোন বানান ভুল থাকে তাহলে তা ঠিক করে নিতে হবে।

তাছাড়া আরো কোন তথ্য সংযুক্ত করার প্রয়োজন হলে, তা সংযুক্ত করতে হবে। সবশেষে আর্টিকেলটি পাবলিশ করতে হবে।

শেষকথা – বাংলা আর্টিকেল লেখার নিয়ম

উপরের বর্ণনাতে আমরা বাংলা আর্টিকেল লেখার নিয়ম সসম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারলাম।

তবে আপনাকে আর্টিকেল লিখে ইনকাম করার জন্য একটি ব্লগ ওয়েবসাইট খোলা শিখতে হবে।

এজন্য আপনি আমাদের ব্লগ ও গুগল অ্যাডসেন্স কোর্সটি শিখতে পারেন।

আর আপনি যদি মনে করেন আপনি আমাদের আইটিতে ব্লগ লিখে মাসে ১৮ হাজার টাকা ইনকাম করতে চান, তাহলে সেটিও করতে পারেন।