যারা ফ্রিল্যান্সিং করেন, তাদের মধ্যে অনেকেরই ধারণা হল এখানে শুধুমাত্র ওয়েব ডিজাইন বা গ্রাফিক্স ডিজাইন এমনকি এস ই ও কাজ ছাড়া অন্য কাজের তেমন ভবিষ্যত নেই। আর সেখানে তারা ডাটা এন্ট্রির কাজকে খুবই তুচ্ছ করে দেখেন। তাদের মধ্যে অনেকেরই ধারণা এই কাজ করে খুবই কম টাকা পাওয়া যায়। আর এই কাজের কোন ভবিষ্যত নেই। কিন্তু তারা কি আসলেই সঠিক টা জানেন?

ডাটা এন্ট্রির কাজ করে কি সফল হওয়া যায়?

আপওয়ার্ক, ফাইবার ও ফ্রিল্যান্সার ডট কমের মত বড় বড় মার্কেটপ্লেস গুলিতে দেখা যায় প্রতিদিন হাজার হাজার ডাটা এন্ট্রির কাজ পোস্ট হয়। আর এই কাজের চাহিদা অনেক বেশি। অনেক বড় বড় ডাটা এন্ট্রির প্রোজেক্টও হয়ে থাকে। আর যারা ডাটা এন্ট্রির ভার্টুয়াল এসিস্টেন্টের কাজ করে থাকেন, তারা এক কাজ থেকেই ২০ লাখ থেকে ৩০ লাখ টাকা আয় করে ফেলেছেন, এমন ফ্রিল্যান্সারও কম নয়।

ডাটা এন্ট্রির কাজ বলতে আমরা সাধারণত টাইপিং এর কাজ বুঝে থাকি। তবে এই ধারণাটি একেবারেই ভুল। ডাটা এন্ট্রির কাজেও ক্রিয়েটিভিটি ও দক্ষতা দেখানোর জায়গা আছে। দেখে নেই কি কি প্রকারের ডাটা এন্ট্রির কাজ আছে।

ডাটা এন্ট্রির বিভিন্ন কাজ কি কি?

এক্সেল ও গুগল সীটস ডাটা এন্ট্রিঃ এর মাধ্যমে বিভিন্ন ডাটা মাইক্রোসফট এক্সেল ও গুগল সীটে ডাটা সংগ্রহ করে বায়ারের দেওয়া ডাটা এন্ট্রি করা হয়।

ওয়ার্ডপ্রেস ডাটা এন্ট্রিঃ এই কাজে ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইটের পোস্ট সেট, ইমেজ সেট, প্রডাক্ট আপলোড ও লিস্ট করা হয়।

কপি পেস্ট জবঃ এই কাজে বায়ার বিভিন্ন ডাটার এক্সেল শীট দিয়ে থাকে। সেটা দেখে দেখে বিভিন্ন অ্যাপে বা সফট ওয়ারে ডাটা বসাতে হয়। এক্ষেত্রে কোন জায়গায় কোন ডাটা বসাতে হবে, তা আপনাকে বুঝে নিতে হবে।

পিডি এফ টু এক্সেল ও পিডিএফ টু ওয়ার্ডঃ এই কাজে পিডি এফ ফাইলের ডাটা ম্যানুয়ালি বা সফটওয়ারের মাধ্যমে এক্সেল ও ওয়ার্ডে রুপান্তর করতে হয়।

ডাটা মাইনিংঃ ডাটা মাইনিং এর মাধ্যমে বিভিন্ন প্রয়োজনীয় ডাটা খুঁজে নিয়ে তা এক্সেল শীটে এন্ট্রি করতে হয়

ডাটা স্ক্রাপিংঃ ডাটা স্ক্রাপিং এর মাধ্যমে যে ডাটা গুলি ওয়েবসাইটে দেখা যায়না, যেমন অনেক ইমেইল অ্যাড্রেস, ফোন নাম্বার তা সফটওয়ার বা এক্সটেনশনের মাধ্যমে খুঁজে বের করার পদ্ধতি।

ওয়েব রিসার্সঃ এই কাজটিই বেশির ভাগ বায়ার দিয়ে থাকে। এক্ষত্রে বায়ার বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করে এক্সেলে এন্ট্রি করতে বলে। তখন বিভিন্ন ওয়েব সাইট রিসার্স করে সেই ডাটা সংগ্রহ করতে হয়। যেমনঃ ইমেইল, ফোন, অ্যাড্রেস ইত্যাদি।

প্রডাক্ট আপলোড, প্রডাক্ট লিস্টিংঃ বিভিন্ন ইকমার্স ওয়েবসাইটের প্রডাক্ট আপলোড, প্রডাক্ট ছবি আপলোড, প্রডাক্ট লিস্ট করা ইত্যাদির কাজ এই ডাটা এন্ট্রির কাজের মধ্যে রয়েছে। যেমনঃ ওয়ার্ডপ্রেস, অ্যামাজন, ইবে, উইক্স, সপিফাই ইত্যাদি।

লিংকইন্ড ডাটা এন্ট্রিঃ এর মাধ্যমে লিংকইন্ড প্রফাইল থেকে বিভিন্ন ব্যক্তির তথ্য বের করে সেটা এক্সেল শীটে ডাটা এন্ট্রি করতে হয়।

বিটুবি লিড জেনারেশনঃ এর মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যবসার ফলাফল, কম্পিটশন, ইমেইল, ফোন ও অন্যান্য তথ্যের কাজ করা হয়।

স্কিপ ট্রাকিংঃ স্কিপ ট্রাকিং এর কাজ সাধারণত রিয়েল স্টেট ব্যবসার বিভন্ন তথ্য ডাটা এন্ট্রি করে কাজ করাকে বোঝায়।

ডাটা এন্ট্রির এই কাজগুলি করতে অনেক পরিশ্রমের পাশাপাশি মেধাও খাটাতে হয়। আর তাই এই কাজ করেও অনেক ভাল আয় করা যায়। এই কাজ করে প্রতি মাসে ৫০ হাজার থেকে ৮০ হাজার টাকা আয় করা কোন ব্যাপারই না।

পোস্টটি শেয়ার করুন-