মানুষের শরীরের গঠনটাই এমন যে, একটু্ মোটা হতে শুরু করলে সবথেকে বেশি পেট মোটা হয়। আবার অনেকের শরীর ঠিকঠাক থাকলেও পেটের কাছে অনেক মোটা হয়ে থাকে। আমরা এটাকে পেটের ভুড়ি বলে থাকি। এই সমস্যা নানা কারণে হতে পারে। তবে এর জন্য সবথেকে বেশি যেটা দায়ী তা হল অনিয়মতান্ত্রিক জীবনযাপন। এছাড়াও নানা কারণে মানব শরীরের পেট বা ভুড়ি বড় হতে শুরু করে। পেট বড় হলে মানুষকে দেখতে অনেক আনস্মার্ট দেখায়। এছাড়া মানুষ অনেক বিব্রত বোধ করে। মানুষের বন্ধুদের মাঝে হাসি তামাশার পাত্র হয়।
কেন পেটের ভুড়ি বেড়ে যায়?
১। অতিরিক্ত চিনি জাতীয় খাবার খাওয়ার ফলে।
২। চা ও কফি দিনে অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে।
৩। নিয়মিত ব্যায়াম ও শরীরচর্চা না করার ফলে।
৪। ঠিকমত পানি না খাওয়ার ফলে।
৫। রাত জাগা ও অনিয়িমতান্ত্রিক জীবনযাপনের ফলে।
৬। অতিরিক্ত ভাজাপোড়া, চকলেট, চিপস, কোল ড্রিংকস, ফাস্টফুড, বেকারী জাতীয় খাবার খাওয়ার ফলে।
৭। নিয়িমিত না হাঁটার ফলে
৮। শাকসবজি ও ফলমূল বেশি করে না খাওয়ার ফলে।
৯। বেশি করে মাংস খাওয়ার ফলে।
১০। টানা চেয়ারে বসে ঘন্টার পর ঘন্টা কাজ করার ফলে।
প্রাকৃতিকভাবে পেটের ভুড়ি কমানোর উপায় কি?
১। চা ও কফি কম খাওয়া
চা ও কফি দিনে একবারের বেশি খাওয়া যাবে না বা গেলেও চিনি ছাড়া খেতে হবে।
২। চিনি জাতীয় খাবার পরিহার
চিনি জাতীয় ও অতিরিক্ত কার্ভাইড্রেট জাতীয় খাবার পরিহার করতে হবে।
৩। রাত না জাগা
রাত জাগা যাবে না ও দিনে কমপক্ষে ৭-৮ ঘন্টা ঘুমাতে হবে। আর নিয়মতান্ত্রিক জীবন যাপনের মধ্যে আসতে হবে।
৪। ফাইবার জাতীয় খাবার খাওয়া
ফাইবার জাতীয় খাবার বেশি করে খেতে হবে। যেমনঃ সবুজ শাকসবজি ও দেশি ফল খেতে হবে। এছাড়া দিনে ১২ গ্লাস পানি খেতে হবে। অতিরিক্ত তেলে ভাজা খাবার, মসলাযুক্ত খাবার, ফাস্টফুড, কোল ড্রিংস, বেকারী খাবার, চকলেট খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। এছাড়া গরুর মাংস কম করে খেতে হবে। আর প্রতিবার ভাত খাওয়ার সময় পরিমিত পরিমাণ খেতে হবে। একেবারে পেট ভরে খাওয়া যাবে না। ফ্যাট জাতীয় খাবারের চাহিদা পূরনের জন্য ডিম, বাদাম ও মাছের তেল খাওয়া যেতে পারে। প্রতিদিন
গ্রীন টি খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।
৫। রাতের খাবারের সময় সঠিক সময়ে
রাতে ঘুমানোর কমপক্ষে ২ ঘন্টা আগে রাতের খাবার খেতে হবে।
৬। লেবুর শরবত
লেবুর শরবত পেটের মেদ কমাতে অনেকটাই সাহায্য করে। তাই প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে হালকা গরম পানিতে একটি লেবুর সম্পূর্ণ রস নিয়ে তা ১ গ্লাস খেতে হবে। এটা নিয়মিত করলে পেটের ভুড়ি অনেকটাই কমে আসবে।
৭। দুশ্চিন্তা থেকে দূরে থাকা
মানসিক অশান্তি ও দুশ্চিন্তা থাকলে তা দূর করে ফেলতে হবে। কারণ মানুষ অনেক সময় দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি পেতে বেশি করে খাওয়া শুরু করে। প্রয়োজনে ডাক্তার দেখাতে হবে।
পেটের ভুড়ি কমানোর জন্য কি কি ব্যায়াম করা যেতে পারে?
১। হাঁটা
পেটের ভুড়ি কমাতে একটানা চেয়ারে বসে কাজ করা যাবেনা। ১ ঘন্টা পর পর ৫ মিনিট হাঁটতে পারেন। প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০ মিনিট জোরে জোরে হাঁটতে হবে। এটা আপনার পেটের ভুড়ি খুবই দ্রুত কমিয়ে দিবে।
২। কার্ডিও ড্যান্স
পেটের ভুড়ি কমানোর অনেক কার্ডিও ড্যান্স ব্যায়াম প্রতিদিন ১৫ মিনিট করতে হবে। এই ব্যায়াম করার নিয়ম ইউটিউব থেকে শিখে নিতে হবে।
৩। সাঁতার ও সাইক্লিং
নিয়মিত সাঁতার ও সাইক্লিং করলে পেটের ভুড়ি একদমই থাকবে না।
পেটের ভুড়ি ও চর্বি থেকে নানা ধরনের অসুখ যেমন ডায়াবেটিস, লিভার সমস্যা, হার্টের সমস্যা হতে পারে। তাই উপরের নিয়ম অনুসরণ করেও যদি কাজ না হয়, তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।