অনলাইনে আয় করা এখন অনেক সহজ হয়ে গেছে। আপনি এখন চাইলেই ঘরে বসে শুধুমাত্র ইন্টারনেটের সাহায্যে ঘরে বসে আয় করতে পারবেন। এর জন্য আপনাকে আর কষ্ট করে বাইরে যেতে হবে না। যে ৫টি সহজ উপায়ে আপনি ঘরে বসেই আয় করতে পারবেন, সেই উপায়গুলি দেখে নিন। আর আজ থেকেই শুরু করে দিন আপনার আয় করার মিশন।
১। গুগল অ্যাডসেন্সের মাধ্যমে
আপনি যদি খুবই ভাল লিখতে পারেন, তাহলে গুগল অ্যাডসেন্সের মাধ্যমে খুবই সহজে আয় করতে পারবেন। এর জন্য প্রথমে আপনাকে ব্লগার বা ওয়ার্ডপ্রেসে একটি ওয়েবসাইট বানাতে হবে। এরপর আপনার সেই ওয়েবসাইটে ব্লগ বা কন্টেন্ট লিখতে হবে। ৩০ থেকে ৪০ টি কন্টেন্ট প্রথম অবস্থায় লিখতে হবে। এরপর আপনার ওয়েবসাইটটির খুব ভালভাবে এস ই ও করতে হবে। আপনার ওয়েবসাইটে সার্চ ভিজিটর আসা শুরু হলে আপনাকে গুগল অ্যাডসেন্সের জন্য অ্যাপ্লাই করতে হবে। গুগল অ্যাডসেন্স ৭ দিনের মধ্যে অ্যাপ্রুভ হয়ে যাবে। অ্যাডসেন্স অ্যাপ্রুভ হওয়ার পর আপনাকে আপনার ওয়েবসাইটে অ্যাড গুলি লাগাতে হবে। আপনি আপনার ব্লগ বা কন্টেন্টের উপরে, নিচে, মধ্যে, সাইডবারে বিভিন্ন জায়গায় অ্যাডগুলি লাগাতে পারেন। এই অ্যাডে যখন কোন ভিজিটর ক্লিক করবে তখনই আপনি টাকা পাবেন।
আপনার ওয়েবসাইটে কোন ভিজিটর আপনার ব্লগ বা আর্টিকেল পড়তে এসে অ্যাডে ক্লিক করলেই আপনার অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্টে টাকা জমা হতে শুরু করবে। প্রথম দিকে ভিজিটর কম থাকলে আপনার টাকা কম জমা হবে। কিন্তু ধীরে ধীরে আপনার ভিজিটর বাড়ার সাথে সাথে আপনার টাকার পরিমাণও বাড়বে। এভাবে আপনি প্রথম দিকে ২০০ থেকে ৩০০ ডলার আয় প্রতি মাসে করা শুরু করতে পারবেন। আর ধীরে ধীরে প্রতি মাসে ১০০০ ডলার আয় করা আপনার কাছে কোন ব্যাপারই হবে না। তবে মনে রাখতে হবে আপনার ওয়েবসাইটের ব্লগ বা কন্টেন্টের কোয়ালিটি অনেক ভাল হয়। আর আপনার ওয়েবসাইটে একটি ভাল মানের ভিজিটর যেন ওয়েবসাইটে হয়, এর জন্য খুবই ভালভাবে এস ই ও করতে হবে। গুগল অ্যাডসেন্সের আয়কৃত টাকা আপনি আপনার ব্যাংক একাউন্টে নিতে পারবেন। কমপক্ষে ১০০ ডলার আয় হলেই গুগল প্রতি মাসের ২১ তারিখে আপনার ব্যাংক একেউন্টে টাকা প্রদান করবে।
২। অ্যাফেলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে আয়

অ্যাফেলিয়েট মার্কেটিং বলতে বোঝায় অন্যের প্রডাক্ট নিজে বিক্রি করে দেওয়া। এতে করে যে প্রডাক্ট বিক্রি করে সে সেই বিনিময়ে একটা কমিশন পেয়ে থাকে। অন্যের প্রডাক্ট সে ওয়েবসাইট, ফেসবুক, ইউটিউব বিভিন্ন মাধ্যমে বিক্রি করে দিতে পারে। এর জন্য অনেক কোম্পানী আছে যারা বিভিন্ন প্রডাক্টের অ্যাফেলিয়েট কোড প্রদান করতে থাকে। সেই কোড আপনি আপনার ওয়েবসাইটে বা ইউটিউব ডিস্ক্রিপশনে বা ফেসবুক পেজে লাগিয়ে টাকা আয় করতে পারবেন। অ্যাফেলিয়েট কোড প্রদান করে এরকম কোম্পানী হল অ্যামাজন, ইবে, আলিবাবা ইত্যাদি। ধরুন আপনি কোন কসমেটিকস প্রডাক্টের অ্যাফেলিয়েট কোড আপনার ইউটিউব চ্যানেলে বা ফেসবুক পেজে লাগাতে চান।
এর জন্য আপনাকে প্রথমে সেই কসমেটিকস পন্য সম্পর্কে একটি ভিডিও বানিয়ে ইউটিউব বা ফেসবুকে দিতে হবে। এরপর আপনার সেই ভিডিও এর ডিস্ক্রিপশনে সেই পন্যের অ্যাফেলিয়েট লিংক বসাতে হবে। আপনার কোন ভিজিটর যখন এই লিংকে ক্লিক করে সেই পন্যটি কিনবে তখনই আপনি একটি অ্যামাউন্টের কমিশন পাবেন। এভাবে আপনার ভিডিওতে যত বেশি ভিজিটর হবে, আপনি তত বেশি টাকা আয় করতে পারবেন। আপনি চিন্তাও করতে পারবেন না, যে এই উপায়ে আপনি বসে বসে মাসে মাসে লাখ টাকাও আয় করতে পারবেন। আপনি হয়তো ঘুম থেকে উঠে দেখবেন আপনার অ্যাকাউন্টে অনেক টাকা জমে আছে। আর সেই টাকা আপনি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে অনায়েসেই তুলতে পারবেন।
ওয়েবসাইটে অ্যাফেলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে আয় করা অনেকটা গুগল অ্যাডসেন্সের মত। এখানেও আপনাকে একটি ওয়েবসাইট বানাতে হবে। আপনি যেই ক্যাটাগরির অ্যাফেলিয়েট কোড আপনার ওয়েবসাইটে লাগাতে চান সেই ধরনের ব্লগ আপনার ওয়েবসাইটে লিখতে হবে। আপনার ওয়েবসাইটের খুবই ভাল এস ই ও করতে হবে। যেন খুব ভাল মানের অনেক ভিজিটর আপনার ওয়েবসাইটে ঢোকে। এরপর আপনার ওয়েবসাইটে অ্যাফেলিয়েট কোড লাগাতে হবে। আপনার অ্যাফেলিয়েট কোডের লিংকে ক্লিক করে কোন ভিজিটর যদি কোন প্রডাক্ট কিনে, তাহলে আপনি সেই প্রডাক্টের একটা কমিশন পাবেন। সেটা ৫% থেকে ১০% হতে পারে। এভাবে এখান থেকে প্রচুর টাকা আয় করা সম্ভব।
৩। ছবি বিক্রি করে আয়

আপনি যদি খুবই ভাল ছবি তুলতে পারেন, তাহলে আপনার একটি ভাল মানের মোবাইল ক্যামেরা দিয়ে ছবি তুলেই অনায়েসেই আয় করতে পারবেন। বহির্বিশ্বে ভাল মানের ছবির খুবই চাহিদা। আর আপনি চাইলেই আপনার তোলা প্রতিটি ছবি থেকে ৫ ডলার থেকে ৫০ ডলার পর্যন্ত আয় করতে পারবেন। বিভিন্ন কোম্পানী ছবি ক্রয় করে থাকে। যেমনঃ adobe, shutterstock, istock, depositphotos, dreamstime ইত্যাদি। এই ওয়েবসাইটে আপনি আপনার মান সম্পন্ন ছবি বিক্রি করে প্রচুর পরিমাণ টাকা ঘরে বসেই আয় করতে পারবেন।
৪। এফ কমার্স
এফ কমার্স মানে হল ফেসবুক কমার্স। এর জন্য প্রথমে আপনাকে কিছু প্রডাক্ট অ্যানালাইসিস করতে হবে। যা বাংলাদেশের মার্কেটে খুব চলছে। এই রকম প্রডাক্ট বের করে আপনাকে খুবই অল্প পরিমাণ ইনভেস্ট করতে হবে। ধরুন আপনি অনলাইনে ফেসবুকের মাধ্যমে ডায়াপার বিক্রি করতে চান। আপনার মূলধন ৫০০০ টাকা। আপনি এর মধ্যে ৩৫০০ টাকার ডায়াপার কিনলেন। আর ১৫০০ টাকা ফেসবুক প্রমোশনে ব্যবহার করলেন। আর সব প্রডাক্ট বিক্রি করে আপনি পেলেন ৭০০০ টাকা। তাহলে আপনার ২০০০ টাকা লাভ হল। এরপর আপনি ১০০০০ হাজার টাকা ইনভেস্ট করলেন। তাহলে আপনার লাভ হবে ৪০০০ টাকা। আর এভাবে এফ কমার্সের মাধ্যমে রাতারাতি অনেক টাকা আয় করা যায়। তবে খেয়াল রাখতে হবে আপনাকে এখানে সৎ থাকতে হবে।
৫। ভার্চুয়াল সার্ভিস বিক্রি করে আয়

আপনি যদি অনেক ভাল ডেভেলপার হয়ে থাকেন, তাহলে আপনি মোবাইল অ্যাপ, সফটওয়ার, অনলাইন সার্ভিস রিলেটেড ওয়েবসাইট, ইউটিউব চ্যানেল ইত্যাদি বিক্রি করে টাকা আয় করতে পারবেন। এর জন্য প্রথমে আপনাকে সেইগুলি বানাতে হবে।
এরপর ফ্লিপা বা অ্যাকুউয়ার ওয়েবসাইটে এই গুলি বিক্রি করে দিতে পারবেন। আর এভাবে আপনি প্রচুর পরিমাণ টাকা ঘরে বসেই আয় করতে পারবেন। তবে এর জন্য আপনাকে অবশ্যই অনেক স্কিলফুল মানুষ হতে হবে।